কিশোরগঞ্জের আইএফআইসি ব্যাংকের কুলিয়ারচর শাখার ম্যানেজারসহ ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যাংকের ভেতর থেকে রহস্যজনকভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রোববার (১ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলা সদরের হাবিব কমপ্লেক্সের দোতলায় আইএফআইসি শাখা ব্যাংক কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ধারণা, ব্যাংক লুট করতে অপরাধী চক্র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর কোনো কিছু প্রয়োগ করে অচেতন করে থাকতে পারে। ব্যাংক থেকে টাকা লুটেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, তিন বছর ধরে হাবিব কমপ্লেক্সের দোতলায় আইএফআইসি ব্যাংকের শাখায় ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ছয় জন। রোববার দুপুর ১টার দিকে কয়েকজন গ্রাহক গিয়ে দেখতে পান প্রধান ফটকের সামনে একজন পড়ে আছেন। ভেতরে অন্যরাও যার যার অবস্থানে পড়ে ছিলেন। তারা সবাই বমি করছিলেন।
পরে গ্রাহকদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে দেখতে পান ক্যাশ কাউন্টারের সামনের কাচ ভাঙা। ছয়জনের মধ্যে শাখা ব্যবস্থাপক সৌমিক জামান খান ও নিরাপত্তাকর্মী কামাল হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অন্যদের নেওয়া হয় জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ব্যবস্থাপক ও নিরাপত্তাকর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আদনান আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, “দুজনের মধ্যে ব্যবস্থাপককে আগে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি অচেতন ছিলেন। হাসপাতালে আনার পর দুজনই বমি করেন। আমাদের ধারণা, বিশেষ ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের অচেতন করা হয়েছে।”
কিশোরগঞ্জের (ভৈরব সার্কেল) সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, “খবর পেয়ে আমিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে এই অজ্ঞানের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। প্রথমে ব্যাংকের ম্যানেজারসহ চারজন কর্মকর্তা এবং পরে দুজন গার্ড অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটি বাজিতপুর আইএফআইসি ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে চলছে। এজেন্ট ব্যাংকের লকারসহ সবকিছুই ঠিকঠাক রয়েছে। আমরা আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। কী কারণে এমনটি হয়েছে, তা ব্যাংকের যারা অসুস্থ তারা সুস্থ হলে তদন্ত করে নিশ্চিতভাবে জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে ফুড পয়জনিং বা অপরাধী চক্র কোনো কিছু ছিটিয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ব্যাংকের ভেতরে কেমিক্যাল জাতীয় কিছুর তীব্র দুর্গন্ধ পেয়েছি আমরা। যারা ব্যাংকে যাচ্ছে, তাদেরই মাথা ঘুরছে।”
তবে, এ বিষয়ে আইএফআইসি ব্যাকং কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য এখনো জানা যায়নি।