আমাদের আশেপাশে এরকম অনেকেই আছেন, যারা সামান্য বিষয় নিয়েই দুশ্চিন্তা করেন। অনেক কিছু ভেবে বসে থাকেন নিজের মধ্যে। এই সমস্যা অনেকের শুরু হয় কিশোর বয়স থেকেই যা চলে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত । যা কোনো ভাল অভ্যাস না। যখন থেকেই শুরু হোক না কেন এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে নিজেকেই। কেননা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার আছে নানা সমস্যা।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্ট্যানফোর্ড হেলথ কেয়ারের ‘সেন্টার ফর স্ট্রেস অ্যান্ড হেলথ’ বিভাগের পরিচালক ডেভিড স্পিগেইল বলেন, ‘অনেকসময় একটি সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার ক্ষতি খোদ ওই সমস্যার কারণে হওয়া ক্ষতির মাত্রাকে ছাপিয়ে যায়।’ তাই এর থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। জেনে রাখুন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় আপনার কী ধরণের ক্ষতি হতে পারে।
আত্নবিশ্বাস কমে যায়
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে আত্নবিশ্বাস কমে যায়। এর এতে মনে হয় একাজ আপনাকে দিয়ে হবে না। শুরুতেই যদি ধরে নেন আপনাকে দিয়ে হবে না, তাহলে পুরো বিষয়টি আপনার জন্য নেতিবাচক হয়ে দাঁড়াবে। এতে আপনার পুরো কর্মপরিকল্পনাই হতে পারে বরবাদ।
কাজে ব্যাঘাত ঘটে
কোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার করার কারণে অসংখ্য সম্ভাব্য করণীয় মাথায় আসে। তবে সমস্যা হল সিদ্ধান্ত স্থির করাই তখন মুশকিল হয়ে যায়। আর এখানেই মানুষ আটকে যায়, ফলে অনেক সময়েই কিছুই আর করা হয়না।
মানসিক সমস্যা তৈরি হয়
সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা করলে খিটখিটে মেজাজ, হতাশা, উৎসাহ হারিয়ে ফেলা থেকে শুরু করে অল্পতেই রেগে যাওয়া, সহজেই ভুলে যাওয়া কিংবা বিভিন্ন অসামাজিক আচরণ দেখা দেয়। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে আগে যেসব বিষয় সহজেই গুছিয়ে নিতে পারতেন, সেটা আর কিছুতেই পারবেন না।
শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়
মানসিক সমস্যার সাথে সাথে দেখা দেয় শারীরিক সমস্যাও। খিদে না লাগা থেকে শুরু করে ঘুম কমে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা, বহুমূত্র এমনকি হৃদ্রোগও দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে। অনেকেরই ‘টেনশন হেডেক’ বা অতিরিক্ত মাথাব্যথা দেখা দেয়। ফলে ঘাড় ও চোখের ব্যথাও হতে পারে।
সৃজনশীলতা কমিয়ে ফেলে
মস্তিষ্কের কিছু অংশ নিষ্ক্রিয় থাকলে মানুষের সৃজনশীলতা বাড়ে। অতিরিক্ত চিন্তায় মগ্ন থাকলে মস্তিষ্কে জং ধরে, সৃষ্টিশীল চিন্তাগুলো ক্রমেই হারিয়ে যেতে থাকে। এটা ঠিক যে কিছু বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে চিন্তা করলে নতুন পন্থা বেরিয়ে আসে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত চিন্তা বা দুশ্চিন্তা মানসিকভাবে আপনাকে বদ্ধ করে ফেলে।
অল্পতেই ভেঙে পড়ে
বেঁচে থাকার জন্য নিত্যদিন সংগ্রাম করতে হয়। আর আপনি যদি কোনো কিছুতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে সাহসের সঙ্গে বেঁচে থাকার প্রবণতাই নষ্ট হয়ে যাবে, যা আপনার ব্যক্তিত্বের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
কর্মশক্তি কমে যায়
চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তা, দুটোতেই মস্তিষ্কের উপর দিয়ে ধকল যায়, খরচ হয় কর্মশক্তি। এবিষয়ে এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গন হেলথয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লরা প্রাইস বলেন, ‘শারীরিক পরিশ্রম নেই কিন্তু মাথায় চিন্তার ঝড় নিয়ে দিন কাটানো মানুষকে দ্রুত অবসাদগ্রস্ত করে তুলবে।’