• ঢাকা
  • সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১০ সফর ১৪৪৬

রাবিতে স্বাধীনতা দিবসের খাবার ছিনিয়ে নিল ছাত্রলীগ!


রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২২, ০৬:০৬ পিএম
রাবিতে স্বাধীনতা দিবসের খাবার ছিনিয়ে নিল ছাত্রলীগ!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে আবাসিক ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নতুন নেতৃত্ব পাওয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার দুপুরে হলটির ডাইনিংয়ে টোকেনধারী আবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবার বিতরণকালে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা যখন খাবার নেওয়ার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছিল তখন হল ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনের নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা জোর করে ভিতরে প্রবেশ করেন এবং হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ১২০ প্যাকেটের মতো খাবার ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সারোয়ার বলেন, “আমি যখন টোকেন নিয়ে খাবার নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এমন আচরণ দেখে আমার কান্না চলে আসছিল। তাদের এমন আচরণ দেখে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আমার টোকেনটি জমা দিয়ে খাবার না নিয়েই চলে আসি। ছাত্রলীগের মতো এমন ঐতিহ্যবাহী এক সংগঠন আজকে স্বাধীনতা দিবসের মতো দিনে সামান্য খাবার নিয়ে যে আচরণ করেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম বলেন, “হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ১০০ প্যাকেট খাবার দাবি করেছিলাম। সেই হিসেবে কর্মীরা সম্মিলিতভাবে গিয়ে খাবার নিয়ে আসে। এতে কিছুটা খাবারের সংকট পড়ে। তবে যারা খাবার পায়নি, প্রাধ্যক্ষ স্যার তাদের জন্যও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। এখানে খাবার ছিনতাইয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।”

খাবার ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, “খাবারে অনিয়মের বিষয়টি আমি অবগত নই। আর এরকম ঘটনা হওয়া সমীচীন নয়। যে বা যারা এই ঘটনায় জড়িত আছেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।”

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. একরামুল ইসলাম বলেন, “আমাদের আয়োজনে কোনো ঘাটতি ছিল না। এই হলের যারা ছাত্রলীগের দায়িত্বে আছে, তাদের ইন্ধনে নেতাকর্মীরা এসে জোর করে ১০০টিরও বেশি খাবার নিয়ে গেছে। এজন্যই খাবারের সংকট পড়েছে। শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের যে আচরণ থাকা উচিত, তা তারা আমাদের সঙ্গে করেনি।”

ড. একরামুল ইসলাম আরো বলেন, “আমরা তাদের আচরণে দুঃখ পেয়েছি। যে সকল শিক্ষার্থী টোকেন থেকেও খাবার পাইনি, তাদেরকে আমরা বাইরে থেকে খাবার এনে দিয়েছি। খাবার ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “শামসুজ্জোহা হলে খাবারে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি শুনে আমরা প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সম্পর্কে হল প্রাধ্যক্ষ আমাদের কাছে রিপোর্ট পেশ করলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।”

Link copied!