• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,
গরমে পাঠদান

‘ক্লাসে ফ্যানের বাতাসে স্বস্তি মিলছে না’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৪, ০৯:৩৯ পিএম
‘ক্লাসে ফ্যানের বাতাসে স্বস্তি মিলছে না’
ফ্যানের বাতাসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংবাদ প্রকাশ

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহের কারণে ২৪ ঘণ্টা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যেই ঢাকাসহ সারা দেশে খুলেছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রোববার (৫ মে) একসঙ্গে সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রথম দিনে কোথাও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। আবার কোথাও বেশি ছিল। তবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে ফ্যানের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তাতে স্বস্তি পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে ফ্যানের বাতাসে কাজ হয় না। কখনও ফ্যান ধীরে চলে, আবার কোনো কোনো সময় চলেই না। তাছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানে গরম অনেক বেশি। গাছপালা কম। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় খোলা রেখে পাঠদানের সময় কমিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছেন অনেক অভিভাবক।

তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিয়া সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গরমে স্কুল-কলেজ বন্ধ দিলে আমরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়বো। তবে পাঠদানের সময় কমে দিলে ভালো হবে।” সে আরও বলল, “কিছুদিন আগে স্কুলে বিদ্যুৎ চলে গিয়ে পাঁচ ঘণ্টাতেও আসেনি। কি যে অসহ্য গরম, বলার মতো না। তার মধ্যেই ক্লাস করতে হয়েছে। ফ্যানও ঠিকমতো চলে না। যেভাবে চলে তাতে ঠাণ্ডা হয় না।”

একই প্রতিষ্ঠানের আয়শা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলল, “শিক্ষকদের পক্ষ থেকে নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেশি বেশি করে পানি খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। বেশিক্ষণ বাইরে না থাকার কথা বলা হয়েছে। এতকিছু করেও অনেক সময় গরম সহ্য হয় না।

আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী বলল, ‘গরম যত বাড়বে ক্লাস করতে তত অসুবিধা হবে। আমাদের অনেক সহপাঠী অসুস্থ হয়ে গেছে। অনেকেই আবার পানি শূন্যতায় ভুগছে। এতকিছুর পরও আমাদের ক্লাস চালিয়ে যেতে হচ্ছে।”

সরেজমিনে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, ক্লাসে ফ্যানের নিচে বসে স্বস্তি খোঁজার চেষ্টা করছে শিক্ষার্থীরা। কেউ আবার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পানি পান করছে। তবে ক্লাস চলাকালীন স্কুলের মাঠে কোনো শিক্ষার্থীর দেখা না পেলেও ছাদ কিংবা গাছের নিচে বসে গল্প করতে দেখা যায় অনেককেই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, এক শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। দুই শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়ে প্রথম শিফট সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় শিফট ৯টা ৪৫ থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষক ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্ব ও যত্নশীল হলেও তাপমাত্রার কাছে হার মানতে হচ্ছে। তারপরও সামনের দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান অভিভাবকদের।

হালিম নামের এক অভিভাবক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সমাধান আসবে না। সন্তানরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়বে। যেটা ইতিবাচক নয়। তবে গরম থেকে রক্ষা পেতে পাঠদানের সময় কমানো যায়। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের আরও বেশি যত্নশীল ও মনোযোগী হতে হবে। তাহলে সুস্থ থেকেই পড়াশোনা করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।”

এদিকে শিক্ষকরা বলছেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। তবে এখন তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই কাজ হবে।

তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গরমের মধ্যে একদিনই আমাদের স্কুল খোলা হয়েছিলো। এরপর বেশি গরমের কারণে মন্ত্রণালয় স্কুল বন্ধ করে দেয়। এখন তাপমাত্রা কমে গেছে। স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশ ভালো। শিক্ষার্থীদের তৃষ্ণা মেটাতে পর্যাপ্ত ফিল্টারের পানির ব্যবস্থা আছে। ফ্যানের ব্যবস্থাও আছে।”

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!