• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় জয় বসাক


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪, ১২:০৭ পিএম
মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় জয় বসাক
জয় বসাক।

পরিবারের কোনো সন্তান মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেই সেখানে বয়ে চলে আনন্দের বন্য। কিন্তু ফরিদপুরের বোয়ালমারীর জয় বসাকের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন জয়। তাতে আনন্দের বদলে দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরেছে জয় ও তার বাবা-মাকে। কারণ ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তি করানো ও পড়ালেখার খরচ চালানোর মতো সঙ্গতি নেই দরিদ্র এই পরিবারের।

জয় বোয়ালমারী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডর বোয়ালমারী বাজারের কেষ্ট বসাকের ছেলে।  কেষ্ট বসাক বোয়ালমারী সদর বাজারের মাংস  হাটের পাশে খোলা রাস্তায় সেলাই মেশিন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিজের কোনো জমিজমা নেই। উত্তরাধিকার সূত্রে বসতবাড়ির দুই শতক জমি পেয়েছেন। সেখানে ছোট একটা ঘর করে পরিবার নিয়ে কোনোমতে বসবাস করেন তিনি। স্ত্রী, ছেলে জয় বসাক আর এক মেয়ে জয়া বসাককে নিয়ে তার সংসার।

জয় বসাক ২০২১ সালে বোয়ালমারী জর্জ একাডেমি থেকে এসএসসি এবং ২০২৩ সালে ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। স্কুল-কলেজর শিক্ষকদের সহযোগিতায় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সম্পন্ন করেছেন জয়।

কেষ্ট বসাক বলেন, রাস্তার পাশে বসে সেলাই মেশিন চালিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই। কোনোদিন বাজার করার টাকা হয়, কোনোদিন হয় না। খেয়ে না খেয়ে, ধারদেনা করে, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি। জয়ে লেখাপড়ায় সহযোগিতা করেছেন শিরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী মৃধা, সহকারী শিক্ষক অসীম কুমার রাজবংশী, কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রভাষক দেবাশিষ সাহা, জর্জ একাডমির শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র, খরসূতী চন্দ্র কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অধীর কুমার।”

কেষ্ট বসাক আরও বলেন, “ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তি করাতে পারবো কিনা, তা-ও জানি না। এখন পর্যন্ত  টাকাপয়সা জোগাড় করতে পারিনি। ছেলের লেখাপড়ায় এ পর্যন্ত যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ।”

জয় বসাকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে তিনি খুশি। তবে তার বাবার চিন্তায় তারও মন খারাপ।

আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ূব আলী মৃধা বলেন, “জয় ছেলেটা মেধাবী। যে কারণে আমরা তাকে সহযোগিতা করেছি। আমার নিকট সে বিনা বেতনে গণিত, রসায়ন প্রাইভেট পড়েছে। বইপত্র দিয়েও তাকে সহযোগিতা করেছি। তার মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়ার খবর শুনে খুশি হয়েছি। সবাই যদি একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে হয়তো ছেলেটা একদিন ডাক্তার হয়ে এ দেশের সম্পদে পরিণত হবে।”

Link copied!