তীব্র দাবদাহের সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে রাজশাহীর জনজীবন। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে রোজাদারসহ নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র এই গরমের প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারেও।
সোমবার (১০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে দেখা যায়, গরমের তীব্রতার কারণে রাস্তা-ঘাটে মানুষজন কম বের হয়েছেন। ছোট ছোট যানবাহনও চলছে সীমিত আকাড়ে। ঈদের বাজারেও কেনাকাটায় তেমন ভীর নেই।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে।
রাজশাহী শহরে অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান ইনসান আলী। তিনি বলেন, “প্রচণ্ড গরমে লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। যে কারণে আমাদের ভাড়াও হচ্ছে না। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে ২-৩শ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এদিকে রিকশা চালাতে গিয়েও হাত-পা গরম হয়ে যাচ্ছে। বেশিক্ষণ থাকা যাচ্ছে না।”
মোহনপুর উপজেলার জামতলা আদিবাসীপাড়ার ভারতী রানী বলেন, “আমরা প্রায় ১০-১২ জন নারী প্রতিদিন অন্যের কৃষি ক্ষেতে কাজ করে থাকি। কিন্তু কয়েকদিন ধরে টানা গরমের কারণে ঠিকমত কাজ করতে পারছি না। ফলে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফিরে আসতে হচ্ছে।“
তীব্র এই গরমের কারণে মানুষ তেমন ঈদের পোশাক কিনতে আসছেন না বলে জানিয়েছেন মোহনপুর উপজেলার কেশরহাটের কাপড় ব্যবসায়ী জিয়াউল রহমান জিয়া।
জিয়া বলেন, “গরমের কারণে বর্তমানে বেচাকিনা কম হচ্ছে। দিনের বেলায় হাট বাজার রাস্তা-ঘাটে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। সকালে একটু বেচাবিক্রি হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা শূণ্য হয়ে যাচ্ছে মার্কেটগুলো। সন্ধার পর আবার কিছুটা শুরু হয়।“
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। রোববার রাজশাহীতে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
আবদুস সালাম আরও বলেন, চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম। তাই গরমের তীব্রতা বেড়েছে।