দিনাজপুরের পার্বতীপুরে প্রেমের সর্ম্পকের জেরে ইউনুস আলী (২৪) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শনিবার (১৭ জুন) রাত ১২টায় উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের হয়বৎপুর এলাকায় একটি ঘরে ইউনুস আলীর মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। ইউনুস আলী হয়বৎপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মাহবুব হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন হয়বৎপুর এলাকার আব্দুল বারির ছেলে শফিুকল ইসলাম (৫৭) এবং পাশ্ববর্তী চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের দিঘারন এরাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৭)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হয়বৎপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনের মেয়ের সঙ্গে ইউনুস আলীর (২৪) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছয় মাস আগে ওই মেয়ের অন্যত্র বিয়ে দেয় পরিবার। বিয়ের পরেও মেয়েটির সঙ্গে নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ হত ইউনুস আলীর। কয়েকদিন আগে বাবার বাড়িতে আসে মেয়েটি। এরই জেরে শুক্রবার (১৬ জুন) রাতে ওই ছেলেকে মুঠোফোনে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় মেয়ের পরিবার। সেখানে রাতভর তাকে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। শনিবার (১৭ জুন) রাত ১২টার দিকে মেয়ের চাচা মাহাতাবের বাড়ি থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় ছেলের পরিবারকে ডেকে শালিসের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করে মেম্বার নুর আলম।
ছেলে পক্ষের হয়ে শালিসে উপস্থিত ওয়াদুদ সরকার দুলু ও ফাইজুল হক জানান, ছেলেকে আড়ালে রেখেই শালিসের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে অভিযুক্ত মেম্বার। এক পর্যায়ে ছেলেকে উপস্থিত করার বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হলে হত্যার বিষয়টি সামনে আসে। এ সময় ঘরের ভেতরে রাখা মরদেহের সন্ধান পান স্থানীয়রা। ছেলের পরিবার মরদেহ দেখে ফেললে পালিয়ে যায় মেম্বারসহ মেয়ে পক্ষের লোকেরা। এ ঘটনার পর থেকে মেয়ের পরিবারের লোকজন গাঁ ঢাকা দিয়েছে।
পার্বতীপুর থানার উপপরিদর্শক মিগেন্দ্রনাথ বলেন, ছেলের বাবা ১৪ জনের নাম উল্লেখ ও ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এর মধ্যে মেয়ের একজন প্রতিবেশি ও মেয়ের মামাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, “মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। থানায় মামলা করার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
আপনার মতামত লিখুন :