• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

হাওরের ধান ঘরে তোলাই যেন ঈদ আনন্দ


সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৩, ০৬:০৪ পিএম
হাওরের ধান ঘরে তোলাই যেন ঈদ আনন্দ

সোনালি ধানে হাসছে সুনামগঞ্জের হাওরগুলো। চারদিকে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ। ঈদের মধ্যেও ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা। বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত ধান ঘরে তুলছেন তারা।

কৃষি অফিস আশা করছেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। তবে আগাম বন্যার আশঙ্কায় হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলতে হাওর এলাকায়, বিভিন্ন হাট বাজার, জনবহুল স্থানেও মাইকিং চলছে। একইসঙ্গে গ্রামের মসজিদ থেকেও মাইকিং করানো হচ্ছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘২৩ এপ্রিল থেকে ভারতের মেঘালয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে হাওরের বোরো ফসল বন্যা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে’ এই আশঙ্কায় গত চারদিন ধরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্দেশে জেলার ১২টি উপজেলার হাওর, বিভিন্ন হাট-বাজার, জনবহুল স্থান ও গ্রামের মসজিদ থেকে মাইকিং করে ধান কাটার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২৩ এপ্রিল) হাওর এলাকা মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) প্রচণ্ড তাপমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যেই কৃষকরা বোরো ধান হাওর থেকে কেটে বাড়ির সামনের খলায় নিয়ে আসছেন। সেখানে মাড়াই করেই শুকানোর কাজে ব্যস্থ সময় পার করছেন কৃষাণীরা। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পরিবারে ছোট সদস্যরাও।  

সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি বছর ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর আনুমানিক মূল্য চার হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৯৪২ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। জেলায় ১ হাজার ধান কাটা মেশিন হাওরে রয়েছে। জেলার জামালগঞ্জ, শাল্লা, ধর্মপাশা ও দিরাই উপজেলার হাওরের ৬০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। অন্যান্য উপজেলার ধান কাটা হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব জানান, হাওর এলাকায় এখন হালকা, মাঝারি বৃষ্টিপাত, ঝড়োহাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ শামসুদ্দোহা বলেন, “বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি থাকলে কৃষক ধান কাটতে পারে না। এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তর ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। তাই হাওরে কৃষকদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় আমরা দ্রুত পাকা ধান কাটার আহ্বান জানাচ্ছি।”

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মকসুদ চৌধুরী বলেন, হাওরের পাকা বোরো ধান নিয়ে কৃষকরা যেন ঝুঁকির মুখে না পড়েন তাই দ্রুত ধান কাটতে মাইকিং করা হচ্ছে।  

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, “হাওরের সব ধান কাটার উপযুক্ত হয়েছে। আর দ্রুত ধান কাটতে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি। হাওরে এখন গড়ে প্রতিদিন ৬ শতাংশ ধান কাটা হচ্ছে। আশা করছি এবার কৃষকদের কোনো ক্ষতি হবে না।”

Link copied!