বিএনপি পুঁটি মাছের মতো লাফা-লাফি করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, “বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে পুকুরে পুঁটি মাছ লাফ-লাফি করে। কিন্তু বড় মাছ তা করে না। বিএনপিও পুঁটি মাছের মতো। কিন্তু তারা ভুলে গেছে পুকুরে বোয়াল মাছও থাকে। বোয়াল মাছ কিন্তু পুঁটি মাছকে খেয়ে ফেলবে।“
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দিনাজপুর গোরে শহীদ বড় মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “গত নির্বাচনে রমেশ দা আপনাকে পরাজিত করে আউট করেছিল। আপনি বার বার বলেন খেলা হবে। আমরা আর আপনার সঙ্গে খেলব না। এবার ছাত্রলীগ খেলবে। চাইলে যুবলীগও খেলতে পারে।”
বিএনপি সমাবেশের নামে পিকনিক পার্টি করছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “তারা কোনো প্রকার সমাবেশ করছে না। তারা সমাবেশের নামে পিকনিক করছে। কুমিল্লায় সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে তাদের নেতাকর্মীরা সেখানে পিকনিক শুরু করে দিয়েছিল। কুমিল্লায় সমাবেশে ১০০ গরু জবাই করে তারা পিকনিক খেয়েছে।”
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের দেশে শীতে হিমালয় ও সাইবেরিয়া থেকে কিছু পাখি আসে, আর ফসল খায়। বিএনপিও ঠিক তেমনই। তারা শীতের পাখির মতো দেশের ফসল খেয়েছে। কিন্তু দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। তার নেতৃত্বে দেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে।”
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।
বরেণ্য অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, “বিএনপি ক্ষমতার থাকাকালীন সময়েও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ক্ষমতার বাইরেও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তারা শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করার জন্য ২০১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ সালে পুড়িয়ে-পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। এখানেই শেষ নয় তারা ১ হাজার গাড়ি পুড়িয়েছে, ৩ হাজার বাড়ি ভাঙচুর করেছে।”
শাজাহান খান বলেন, “বিএনপির সমাবেশে পরিবহন ধর্মঘট হয়। আমাদের দেশের পরিবহন শ্রমিক ভাইয়েরা সেই সময়ের গাড়ি ভাঙচুরের নিরব প্রতিবাদ হিসেবে এই ধর্মঘট করছে। আমরা হলফ করে বলতে পারি ধর্মঘটের বিষয়ে কোনো প্রকার নির্দেশনা দেয়নি।“
তিনি আরও বলেন, “মির্জা ফখরুল একদিন বললেন তিনি নাকি মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কোথা থেকে মুক্তিযুদ্ধ করলেন। তার বাবা নাকি রাজাকার ছিলেন। স্বাধীনতার পরে ভারতে তিন মাস পালিয়ে ছিলেন। তিনি কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা হোন। তারা বলেন, খালেদা জিয়াও নাকি মুক্তিযোদ্ধা। আমি মির্জা ফখরুল ইসলামকে জিজ্ঞাস করতে চাই, যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে আমার দেশের ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল। তাদের আত্মীয়তায় খালেদা জিয়া ঢাকা ক্যান্টরম্যান্টে ৯ মাস ছিলেন কেন?”
ত্রি-বার্ষিক এই কাউন্সিলে বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সদস্য ও সাবেক এমপি সফুরা বেগম রুমি, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, সাবেক মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, শিবলী সাদিক ও জাকিয়া তাবাসসুম জুই।
দীর্ঘ ১০ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি হিসেবে পুনরায় অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলতাফুজ্জামান মিতার নাম ঘোষণা করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :