• ঢাকা
  • শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩০, ২১ রমজান ১৪৪৬
শারদীয় দুর্গোৎসব

সিলেটে প্রস্তুতি শেষে উৎসবের অপেক্ষা


সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১, ০৯:৪০ এএম
সিলেটে প্রস্তুতি শেষে উৎসবের অপেক্ষা

সিলেটে শারদীয় দুর্গোৎসবের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন। বর্তমানে সিলেটের ৬০৭টি মণ্ডপে চলছে সাজ সাজ রব। 

রোববার (১০ অক্টোবর) মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা। পর্যায়ক্রমে ১৫ অক্টোবর আসবে দশমীর দিন। ওইদিন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় উৎসব।

শনিবার (৯ অক্টোবর) সিলেটের বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমার কাঠামো তৈরি এবং তাতে রং করার কাজ শেষ। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের সাজ-সজ্জা। একই সঙ্গে চলছে মণ্ডপের তোরণ নির্মাণ এবং আলোকসজ্জার কাজ।

পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার তথ্য অনুযায়ী, সিলেট জেলায় ৫৪০টি মণ্ডপে হবে পূজা উদযাপন। আর মহানগর এলাকায় পূজা হবে ৬৭টি মণ্ডপে। সব মিলিয়ে ৬০৭টি মণ্ডপে মহা ধুমধামে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে এখন।

তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির বিষয়টিও মাথায় রাখছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন ঘোষ বলেন, করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রোববার মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শারদ উৎসব শুরু হবে। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে দেবী দুর্গার বর্ণিল সাজ-সজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ। প্রতিমায় রং করা শেষ। পূজার যাবতীয় উপকরণ তৈরি, পূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, চণ্ডীপাঠ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি, ভজন কীর্তন, আলোকসজ্জা ও ডেকোরেশনসহ নানারকম প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা, জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা ও পরিদর্শন বই রাখার জন্য আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছি। আশা করছি এবার সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শারদ উৎসব আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে উদযাপন করা হবে।

রজত কান্তি আরও বলেন, করোনার কারণে আমরা ভিড় এড়াতে মণ্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আরতি প্রতিযোগিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া প্রতিটি মণ্ডপে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। মণ্ডপে বসে প্রসাদও খাওয়া যাবে না। সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মানেন।

নগরীর দাড়িয়াপাড়া এলাকার প্রতিমাশিল্পী দুলাল পাল বলেন, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। রং-তুলির কাজও শেষ হয়েছে। শনিবার রাতের মধ্যেই প্রতিমাগুলো পৌঁছে যাবে মণ্ডপে মণ্ডপে।

এদিকে, দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে নগরীর বিপনীবিতাণগুলোতে চলছে কেনাকাটার উৎসব। সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া ও লামাবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায় দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। বিশেষ করে পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় ছিল লক্ষণীয়।

পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি মণ্ডপে ১ জন করে পুলিশ এবং পর্যাপ্ত আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা টহলে থাকবেন।”

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, “সিলেট নগরীতে আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বিষয়ে গত ২ অক্টোবর মতবিনিময় সভা হয়েছে। পূজার সময় নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজা শুরুর আগের দিন থেকে প্রতিটি মণ্ডপের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপের সামনে যানজট নিরসনে ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করবে। সাদা পোশাকেও বিভিন্ন পূজামণ্ডপে পুলিশ সদস্যরা থাকবেন।”

বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, পূজামণ্ডপগুলোতে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী, স্যানিটাইজার, অগ্নি নির্বাপক ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মণ্ডপগুলোতে পুলিশের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করবেন।

সিলেট রেঞ্জের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড ক্রাইম এনালাইসিস) জেদান আল মুসা বলেন, দুর্গাপূজাকে ঘিরে সিলেট বিভাগের প্রতিটি পূজামণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বিষয়ে মতবিনিময় সভা হয়েছে। পূজার সময় নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ষষ্ঠী পূজার দিন থেকে প্রতিটি মণ্ডপের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া যানজট নিরসনে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপের সামনে ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করবেন। সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পূজামণ্ডপে থাকবেন।
 

Link copied!