• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

রোমাঞ্চকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক জিম্বাবুয়ের


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২২, ০৮:৪৩ পিএম
রোমাঞ্চকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক জিম্বাবুয়ের

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে  বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তবে ব্যাটারদের দেওয়া ১৩০ রানকেই জয়ের জন্য যথেষ্ট বানিয়ে নিয়েছেন জিম্বাবুইয়ান বোলাররা। মাঝের ওভারে সিকান্দার রাজার স্পিন ম্যাজিক ও শেষে ব্রাড ইভানসের দুর্দান্ত ফিনিশ! এতেই পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে পাকিস্তানকে এক রানের ব্যবধানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। প্রথম দুই বলে সাত রান তুলে সেটাকে আরও সহজ করে নিয়েছিল মোহাম্মদ নেওয়াজ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম। কিন্তু সেই সহজ পথকে কঠিন বানিয়ে দিয়ে শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ে রোমাঞ্চকর জয় এনে দিয়েছেন পেসার ব্রাড ইভানস।

বৃহস্পতিবার(২৭ অক্টোবর) টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ফেরার পর আর কেউই উইকেটে থিতু পারেননি।

এক রানের ব্যবধানে ফিরে যান আরেক ওপেনার ওয়েসলি মাধেভারে। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে মিল্টন শুম্বাকে নিয়ে চাপ সামাল দেন শেন উইলিয়ামস। তবে ২২ রানের ব্যবধানে শুম্বা ফিরে গেলে আবারও চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

অন্যপান্তে কেউ থিতু হতে না পারলেও বেশ ভালোই সামাল দিচ্ছিলেন উইলিয়ামস। দলীয় ৯৫ রানে ব্যক্তিগত ৩১ রানে তিনি ফেরার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপ।

৯৫ রানেই ফিরে সিকান্দার রাজা, রেজিস চাকাভা ও লুক জংওয়ে। এরপর শেষদিকে ব্রাড ইভানসের ১৫ বলে ১৯ রানের সৌজন্যে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৩০ রানের সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে।  

স্বল্প লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জিম্বাবুইয়ান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতে রান করতেই হিমশিম খাচ্ছিল দুই পাকিস্তানি ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে পাওয়ার প্লের মধ্যই ফিরে যান দু’জনেই।

চার নম্বরে ব্যাটিং করতে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ইফতেখারও। দলীয় ৩৬ রানে তাকে ফিরিয়ে দেন লুক জংওয়ে। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিন নম্বরে নামা শান মাসুদ।

পাঁচ নম্বরে নামা শাদাব খানকে নিয়ে বেশ সাবলিলভাবেই দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মাসুদ। এরপরই শুরু রাজা ম্যাজিক! মুহূর্তের মধ্যে তিন উইকেট তুলে আবারও ব্যাকফুটে ঠেলে দেন পাকিস্তানকে।

দলীয় ৮৮ রানে শাদাবকে ফিরিয়ে ৫২ রানের জুটি ভেঙে শুরু।  পরের বলে হায়দার আলীকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে জোড়া ধাক্কা দেন রাজা। টানা দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে পাকিস্তান।

এরপর পাঁচ রানের ব্যবধানে গলার কাটা হয়ে ওঠা শান মাসুদকেও স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন রাজা। রাজার বোলিং যাদুতে হারতে থাকা ম্যাচে আচমকাই চালকের আসনে বসে জিম্বাবুয়ে।

রাজার ম্যাজিকে ম্যাচে ফেরার পর অন্যান্যরাও দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে থাকেন। ক্রমশ পাকিস্তানি ব্যাটারদের চোখ রাঙাতে থাকে হারের শঙ্কা।

শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৯ রানের। ব্লেসিং মুজারাবানির করা ১৮তম ওভার থেকে আসে মাত্র ছয় রান।

দুই ওভারে ২২ রানের সমীকরণ সহজ করেন ফেলেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। ১৯তম ওভারে এক ছক্কা, দুই ডাবল ও এই সিঙ্গেলে আসে ১১ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১১ রান।

শেষ ওভারের প্রথম বলে তিন রান নিয়ে পাঁচ বলে আট রানের সমীকরণ বানন নেওয়াজ। দ্বিতীয় বলে লং অফের উপর দিয়ে দুর্দান্ত চার হাঁকিয়ে ম্যাচের ফল প্রায় লিখে দেন বোলিংয়ে চার উইকেট নেওয়া পাকিস্তানি ব্যাটার মোহাম্মদ ওয়াসিম।

তিন বলে তিন রানের সমীকরণে এক বল ডট দেন নেওয়াজ। পরের বলেই শর্ট লং অফে জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনের হাতে তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান নেওয়াজ।

এক বলে তিন প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের জয়ের জন্য। ব্রাড ইভানসের করা শেষ বলে এক রানের বেশি নিতে পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটার শাহিন শাহ আফ্রিদি। দুই নিতে গিয়ে শাহিন রান আউট হলে জয় নিশ্চিত হয় জিম্বাবুয়ের। এরপর পাকিস্তান বধের উল্লাসে মেতে ওঠানে সিকান্দার রাজা-আরভিনরা। 

 

Link copied!