ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিলকে আটকে দেওয়ার জন্য সার্বিয়ার রক্ষণ হয়েছিল চীনের মহাপ্রাচীর। বারবার আটকে যাচ্ছিলেন নেইমার-রিচার্লিসনরা। প্রথমার্ধের বিরতির আগ পর্যন্ত ব্রাজিলের কোনো আক্রমণই পায়নি পূর্ণতা। অবশেষে ৬০ মিনিটের মাথায় ডেডলক ভাঙেন রিচার্লিসন। এর ১২ মিনিট পর ৭২তম মিনিটে আবারও ব্রাজিলিয়ান ম্যাজিক। আবারও রিচার্লিসন। সার্বিয়ান ডি-বক্সে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল দুর্দান্ত স্কিলে রিসিভ করে বাইসাইকেল কিকে চোখ ধাঁধানো গোলটি বহুদিন মনে থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত একটা শুরু হওয়া ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ চাড়ে সেলেকাওরা। পুরো ৯০ মিনিট জুড়েই সার্বিয়ার রক্ষণকে আক্রমণের পর আক্রমণে দিশেহারা করে রাখে ব্রাজিল। চোখ ধাঁধানো পাস থেকে শুরু দুরন্ত গতি সবই ছিল ব্রাজিলের খেলায়।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে নিজেদের প্রান্ত থেকে গুছিয়ে আক্রমণ করে ব্রাজিল। ডান প্রান্ত থেকে বল নিয়ে সার্বিয়ার ডি বক্সে ঢুকে যান রাফিনহা। সেখান থেকে বাড়ানো বল সার্বিয়ার ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের দশম মিনিটে ডি বক্সে বল পান নেইমার। কিন্তু গোলমুখে শট করতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের ১২ মিনিটে বাম প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ঢোকে ব্রাজিল। সার্বিয়ার ডি-বক্সে ঢুকে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। সেখান থেকে কর্নার পায় ব্রাজিল, যদিও গোল করতে ব্যর্থ।
ম্যাচের ২০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে সার্বিয়ার গোলমুখে জোরালো শট করেন নেইমার। তবে তা সার্বিয়ার ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচের ২৫ মিনিটে প্রতি আক্রমণে নাম লেখায় সার্বিয়া। ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারকে অবশ্য কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি।
৩৫ মিনিটের মাথায় আবারও ব্রাজিলের আক্রমণ। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে ব্যর্থ রাফিনহা।
ম্যাচের ৪০ মিনিটে বাম দিক থেকে আক্রমণ সাজায় ব্রাজিল। ভিনিসিয়াস ডি বক্সে ঢুকলেও তা গোলমুখে শত নিতে ব্যর্থ হন। গোলশূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় উভয় দল।
বিরতির পরই গোলপোস্টের সামনে সার্বিয়া গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন রাফিনহা। শটও নিয়েছেন। তবে সেটি গিয়ে লাগে গোলরক্ষকের পায়ে।
এরপরও দুরন্ত ফুটবল খেলছির ব্রাজিল কিন্তু সার্বিয়ার রক্ষণ এবং ভাগ্যের কাছে বারবার আটকে যাচ্ছিল সাড়াশি আক্রমণ।
অবশেষে ৬১ মিনিটে গেলের দেখা পায় ব্রাজিল। বল নিয়ে সার্বিয়ার ডি-বক্সে ঢুকে যান নেইমার। পাস বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। বল পেয়েই সার্বিয়ার জালে বড় শট নেন এই রিয়াল তারকা। কিন্তু সার্বিয়ার গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় ফিরে আসে। তবে ওই ফিরতি শটে বল জলে পাঠান আনমার্কড থাকা রিচার্লিসন।
ম্যাচের ৭২ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ম্যাজিক। দুর্দান্ত এক গোল করে রিচার্লিসন। সার্বিয়ান ডি-বক্সে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল দুর্দান্ত স্কিলে রিসিভ করে বাইসাইকেল কিকে চোখ ধাঁধানো গোল করেন রিচার্লিসন।
নেইমারের (২০১৪) পর ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ অভিষেকেই জোড়া গোল করা প্রথম ফুটবলার তিনি। ৮০ মিনিটে অস্বস্তি অনুভব করা নেইমারকে তুলে নেন তিতে।
এর পরের মিনিটে ব্যবধান ৩-০ প্রায় করেই ফেলেছিলেন ক্যাসেমিরো। কিন্তু তার বাঁকানো শটটি পোস্টে লেগে ফিরে আসে। বাকিটা সময় ম্যাচে ফেরা তো দূরের কথা নিজেদের দুর্গ সামলাতেই মহাব্যস্ত থাকতে হয় সার্বিয়াকে।
আপনার মতামত লিখুন :