• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
কাতার বিশ্বকাপ

ফুটবল যজ্ঞে হইচই ফেলে দেওয়া পাঁচ অঘটন


সৌরভ কুমার দাস
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২২, ০২:০৬ এএম
ফুটবল যজ্ঞে হইচই ফেলে দেওয়া পাঁচ অঘটন

দিন কয়েক আগে পর্দা নেমেছে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। বেশ কয়েকটি অঘটনের জন্ম দিয়েছে এবারের আসর। অঘটনের দিক থেকে এবারের আসরকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা আসর বলা হচ্ছে।

এদিকে দুই দিন পর মধ্যেপ্রাচ্যের দেশের কাতারে পর্দা উঠবে ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসরের। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসেও ঘটেছে কিছু বড় অঘটন। যেখানে রীতিমতো শিরোপা জয়ের দৌড়ে ফেভারিট দলকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছে ছোট দলগুলো। ফুটবল বিশ্বকাপের শীর্ষ পাঁচ অঘটন নিয়ে সংবাদপ্রকাশের আজকের আয়োজন।

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক যুক্তরাষ্ট্রের, ১৯৫০ বিশ্বকাপ

১৯৫০ ব্রাজিল বিশ্বকাপে আধা-পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। যাদের অনেকেই ছিলেন শিক্ষক, আবার অনেকে কাজ করতেন মিলে।

অন্যদিকে তারকায় ভরপুর ইংলিশ দলকে সে সময় বলা হতো ‘ফুটবলের রাজা।’ ম্যাচে ইংলিশরা কতটা ফেভারিট ছিল সেটা বোঝা যায় সেদিনকার বাজির দরেই! সেদিন ইংল্যান্ডের পক্ষে বাজির দর ছিল ৫০০ঃ ১।

 অনেকের কাছেই ম্যাচটি ছিল স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার! অথচ সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল তারা।

ওই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে একমাত্র গোলদাতা জো গায়েতজেন্স কাজ করতেন রেস্টুরেন্টে। বিশ্বকাপেই শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলেছিলেন তিনি।

ফ্রান্সের বিপক্ষে সেনেগালের ঐতিহাসিক জয়, ২০০২ বিশ্বকাপ

২০০২ সালে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছিল সেনেগাল। অভিষেকেই বিশ্বমঞ্চের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে সবাইকে অবাক করে দিইয়েছিল তারা।

জিনেদিন জিদান, থিয়েরি অঁরিদের নিয়ে গড়া তারকায় ঠাসা ফ্রান্স ২০০২ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবেই খেলতে নেমেছিল। চোটের কারণে সেদিন জিদান না থাকলেও প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বিবেচনায় সেটা এতটুকু চিন্তার কারণ ছিল না ফরাসিদের জন্য ।

তবে নামে-ভারে, শক্তিতে এগিয়ে থাকা ফ্রান্সকে ওই ম্যাচে স্তব্ধ করে দিয়েছিল সেনেগাল। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে করা পাপা বুবা দিয়ুপের একমাত্র গোলে ফরাসিদের বিপক্ষে ইতিহাসের অন্যতম সেরা অঘটনের জন্ম দেয়ে সেনেগাল।

পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে আলজেরিয়ার জয়, ১৯৮২ বিশ্বকাপ

দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ান পশ্চিম জার্মানি ১৯৮২ সালে হট ফেভারিট দলগুলোর একটি ছিল। অথচ প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসে তাদেরকেই হারিয়ে দিয়েছিল আলজেরিয়া।

প্রথমার্ধে কোনো গোল হয়নি সেদিন। ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে প্রথমবার লিড পায় আলজেরিয়া। ৬৭তম মিনিটে জার্মানি সমতায় ফেরার সময়েও মনে হয়নি এ ম্যাচ আলজেরিয়া জিততে পারে।

তবে এসব ভাবার আগেই পরের মিনিটেই আবারও লিড পায় আলজেরিয়া। যে গোল ম্যাচের বাকি সময়ে হাজারও চেষ্টা করেও শোধ দিতে পারেনি জার্মানি।

ব্রাজিলের বিপক্ষে ‘অভিশপ্ত‍‍` জয় নরওয়ের, ১৯৯৮ বিশ্বকাপ

১৯৯৪ বিশ্বকাপ জেতার পর ১৯৯৮ সালেও শিরোপা জয়ের দৌড়ে হট ফেভারিট ছিল ব্রাজিল। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে নামের প্রতি সুবিচারও করেছিল তারা।

তবে অঘটনটা ঘটে গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচে।  রবের্তো কার্লোস, রোনালদো, রিভালদো, দুঙ্গাদের নিয়ে নিয়ে গড়া হট ফেভারিট ব্রাজিলকে হারিয়ে হইচই ফেলে দেয় নরওয়ে।

ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে গোল পায় ব্রাজিল পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে সমতায় ফেরা নরওয়ে। এরপর ম্যাচ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইতিহাস গড়ে নরওয়েকে জয় এনে দেন আন্দ্রে ফ্লোরে।

মজার বিষয় এই যে, ব্রাজিলকে হারানোর পর আর কখনোই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়নি নরওঁয়ে। ফলে বিশ্ব মঞ্চে তাদের শেষ জয় হয়ে আছে এ ম্যাচই।

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ক্যামেরুনের জয়, ১৯৯০ বিশ্বকাপ

১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর ১৯৯০ বিশ্বকাপের হট ফেভারিট ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু ধারে-ভারে, ইতিহাস-ঐতিহ্যে পিছিয়ে থাকা ক্যামেরুনের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই হেরে বসে দলটি।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় ক্যামেরুন। ম্যাচের শেষ ২৯ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলেও সেই এক গোলের লিড ধরে রেখেছিল তারা।

আর্জেন্টিনাকে হারানোর পর ঐ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেললেও এরপরের পাঁচ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব পার করতে পারেনি তারা।

ইতালির ওই আসরের পর ক্যামেরুন বিশ্বকাপে খেলেছে আরও পাঁচবার। একবারও তারা পার হতে পারেনি গ্রুপ পর্বের বৈতরণী।

 

 

 

 

 


 

 

Link copied!