১৩৬ রানের লক্ষ্য পেরোলেই স্বপ্নের ফাইনাল। আরাধ্য শিরোপার হাতছানি! দুবাইয়ের উইকেটে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের সামনে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও হাতের নাগালেই ছিল বলা চলে। শুধু দেখেশুনে খেললেই জয় সুনিশ্চিত। এমন ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে কে কাকে ছাড়াবেন সে প্রতিযোগিতায় নামলেন।
উইকেট হারানোর মিছিলে শেষ দিকে সবার ভরসা ছিল শামীমকে নিয়ে। অথচ শাহিন আফ্রিদির করা বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে হুসেইন তালাতকে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করালেন এই ব্যাটার। এরপরই কার্যত সব আশা শেষ হয়ে যায়। যদিও শেষ ওভারে রিশাদ কিছুটা ঝলক দেখিয়েছেন। তবে সেটিও তার সতীর্থ ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঢাকতে যথেষ্ট হলো না।
পাকিস্তানের ছুড়ে দেওয়া ১৩৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে। ১১ রানের জয়ে ভারতের পর এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল পাকিস্তান। এক আসরে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল। ২৮ সেপ্টেম্বর হবে শিরোপার লড়াই।
১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শূন্য রানে ফেরেন পারভেজ ইমন। তার পথ ধরেন তাওহীদ হৃদয়ও। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আশা দেখাচ্ছিলেন ভারতের বিপক্ষে ফিফটি করা সাইফ। যদিও এদিন ইনিংস বড় করতে পারেননি। হারিস রউফের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাইম আইয়ুবের হাতে ধরার পড়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে কেবল ১৮ রান।
কার্যত সেমিফাইনালে রূপ নেওয়া এই ম্যাচে একাদশে ফেরানো হয়েছিল উইকেটকিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানকে। যদিও শুরু থেকেই খুব একটা আত্মবিশ্বাসী মনে হয়নি তাকে। সাইম আইয়ুবকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে নাওয়াজের হাতে ধরা পড়েন।
লিটন দাস ইনজুরির কারণে ম্যাচের বাইরে থাকায় নেতৃত্বে ছিলেন জাকের আলি। অধিনায়ক দলের বিপদ আরও বাড়ান। অদ্ভুত শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ প্র্যাকটিস করালেন যেন পাকিস্তানি ফিল্ডারকে। রান পাননি শেখ মেহেদী-তানজিম সাকিবও।
২৫ বলে ৩০ রান করে বিদায় নিলে টাইগারদের হার কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। শেষ দিকে কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছেন টাইগার ব্যাটাররা। রিশাদ চেষ্টা করলেও আর পেরে উঠেননি। শেষ পর্যন্ত সবকটি ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১২৪ রান। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন শাহীন আফ্রিদি এবং হারিস রউফ।
এর আগে দুবাইতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করেছিল পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন মোহাম্মদ হারিস। বাংলাদেশের হয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার ছিলেন তাসকিন আহমেদ।
৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ফখর জামান ও সালমান আলি আগা। দুজনে মিলে পাওয়ার প্লের বাকি ওভারগুলো দেখে-শুনে খেলেছেন। তবে পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৭ রান তুলতে পেরেছে তারা। তাই পাওয়ার প্লে শেষে বড় শট খেলতে যান ফখর।
সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলটি অফ-মিডল স্টাম্পের ওপর করেছিলেন রিশাদ হোসেন। সেখানে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়েছেন ২১ বলে ১৩ রান করা ফখর।
নিজের পরের ওভারে ফিরে আবারো উইকেট পেয়েছেন রিশাদ। এবার তার শিকার হুসেইন তালাত। ৭ বল খেলে ৩ রান করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। তাতে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পাকিস্তান।
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (হারিস ৩১, নেওয়াজ ২৫, আফ্রিদি ১৯, সালমান ১৯, ফাহিম ১৪*, ফখর ১৩; তাসকিন ৩/২৮, রিশাদ ২/১৮, মেহেদী ২/২৮, মোস্তাফিজ ১/৩৩)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৯ (শামীম ৩০, সাইফ ১৮, নুরুল ১৬, রিশাদ ১৬*, মেহেদী ১১, তানজিম ১০; আফ্রিদি ৩/১৭, রউফ ৩/৩৩, সাইম ২/১৬, নেওয়াজ ১/১৪)।
ফল: পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শাহিন শাহ আফ্রিদি।