টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমি ফাইনালের লড়াই শুরু হয়ে যাচ্ছে আজ। আজ নক আউট পর্বের বাধা পেরুতে পারলেই ফাইনালে ওঠে যাবে দল। ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড নাকি, কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড—কে উঠবে ফাইনালে? শক্তিশালী দুই দলের মুখোমুখী হওয়াকে এক হিসেবে প্রতিশোধের ম্যাচও বলা যায়। কারণ কিউইদের কাঁদিয়েই ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংলিশরা। সে ঘটনাকে মনে রেখে আজ কি প্রতিশোধের নেশায় মাঠে নামবে ব্ল্যাক ক্যাপসরা?
ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড দুই দলই তারকায় ঠাসা। দলের নেই পারফর্মারের অভাব। কেউ খারাপ খেললে অন্যকেউ এসে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। বিশ্বমঞ্চের বড় আসরে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে উদগ্রীব হয়ে আছে দুই দলই। তারকা ঠাসা দলে সেমি ফাইনালে কার দিকে নজর থাকবে চলুন তা দেখে নেই—
প্রথমেই যদি ইংলিশদের দিকে নজর দেই। তাহলে এগিয়ে রাখতে হবে জস বাটলারের মতো বিধ্বংসী ব্যাটারকে। আর তাদের দলে যেহেতু তারকার অভাব নেই তাই জনি বেয়ারস্টো, ডেভিড মালান, আদিল রশীদ ও মরগানকেও রাখা যায় নজরে। তবে যাকে একটু বেশীই অগ্রাধিকার দিতে হবে তিনি হচ্ছেন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার মঈন আলী।
চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচই খেলেছেন বাটলার। এর মধ্যে তিন ম্যাচেই থেকেছেন অপরাজিত। আর চলতি বিশ্বকাপের একমাত্র সেঞ্চুরিটাও এসেছে তার ব্যাট থেকেই। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অপরাজিত ২৪*, শুধুমাত্র বাংলাদেশের বিপক্ষেই সর্বনিম্ন রান করেছেন তিনি। তারপরেও ১৮ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে।
এরপরের ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে খেলেছেন অপরাজিত ৭১* রানের বিস্ফোরক ইনিংস। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে! লঙ্কান বোলারদের তুলোধোনা করে আসরের একমাত্র অপরাজিত সেঞ্চুরি (১০১*) তুলে নিয়েছেন তিনি। গ্রপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৬ রান করতে পেরেছিলেন বাটলার।
এদিকে ব্যাটে বলে দুই জায়গাতেই পারফরম্যান্সের কোনো কমতি রাখেননি মঈন আলী। বিশ্বকাপ আসরের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ রান, তবে গুরুত্বপূর্ণ দুই দুইটি উইকেট তুলে নেন তিনি। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নামতেই হয়নি। তবে বল হাতে নিজের কাজটা ঠিকই করেছেন তিনি। দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং মেরুদন্ডকে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। অবশ্য অজিদের বিপক্ষে ব্যাট বা বল কোনোটাই করতে হয়নি তাকে।
লঙ্কানদের বিপক্ষে দুই উইকেটের পাশাপাশি ১* রান করতে পেরেছিলেন মঈন আলী। আর গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মারমুখী ৩৭ আর ১ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।
এদিকে নিউজিল্যান্ড দলেও রয়েছে তারার মেলা। তারার মেলা বললে একটু কম বলা হয়ে যায়, বলতে হবে পারফরমারের মেলা। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন, বিশ্বসেরা ফাস্ট বোলার ট্রেন্ড বোল্ট, টিম সাউদি এমনকি ঈশ সোদির মতো স্পিনার রয়েছে কিউইদের দলে। তার বিধ্বংসী ব্যাটার ডেভিড কনওয়ে ও মার্টিন গাপটিল তো আছেনই। তবে এদের মধ্যে গাপটিল ও ঈশ সোদিকে একটু নজরে রাখতেই হবে।
ব্যাট হাতে চলতি বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন গাপটিল। তবে সব ম্যাচেই তার ব্যাট থেকে এসেছে রান। চলতি বিশ্বকাপের সর্বশেষ ৫ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭, ২০, ৯৩, ১৮ ও ২৮ রান। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও হাসতে পারে তার ব্যাট।
এদিকে বিশ্বকাপে ঈশ সোদির বোলিং কারিশমায় ভুগতে হয়েছে অনেক ব্যাটারকে। প্রথম তিন ম্যাচেই ২টি করে উইকেট নিয়ে ব্যাটারদের চাপে রেখেছিলেন তিনি। পাকিস্তান, ভারত ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও দেখিয়েছেন নিজের বোলিং প্রতিভা।
আর শেষের দুই ম্যাচে নামিবিয়া ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিয়েছিলেন একটি করে উইকেট। বেশী উইকেট তার ঝুলিতে না থাকলেও দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেক থ্রো এনে দিতে ভালোই পটু তিনি। আজ সেমিফাইনালে ইংলিশরাও কি তার কাছে হার মানবে তা এখন দেখার পালা।