চলতি আসরের ইউরো যেন শুরু থেকেই ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলো। সেই দেখা পাওয়া গেলো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ের ম্যাচগুলোতেও। গতকাল কোপেনহেগেনের পারকেন স্টেডিয়ামে স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে মূল সময় শেষে ৩-৩ গোলে ড্র হয়। অতিরিক্ত সময় শেষে মোরাতার সৌজন্যে স্কোরলাইন ৫-৩ গোলে দাঁড়ালে টাইব্রেকারের ঝুঁকি ছাড়াই শেষ আটে পা রেখেছে স্পেন।
প্রথমার্ধের ২০ মিনিটের সময় অদ্ভূত এক কান্ড করে বসলেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনায় সিমোন। পেদ্রি তাকে পাস দিয়েছিলেন, যার গতি ছিলো কিছুটা বেশি। সেটিকে পা দিয়েই আটকে দেয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। কিন্তু পা ছোঁয়ানোর আগের ড্রপ খেয়ে বাঁক নেয়া বল সোজা জালে জড়ালে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিলোনা তার। অবশ্য ৩৮তম মিনিটে সারাবিয়ার গোলে সমতায় ফিরে লুইস এনরিকের দল। ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ প্রথমে গায়ার শট ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি শটে বল জালে জড়ান পিএসজি মিডফিল্ডার সারাবিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম দিকেই এগিয়ে যায় স্পেন। ৫৭তম মিনিটে ফেররান টরেসের পাস থেকে দুর্দান্ত হেডে বল জালে জড়ান আসপিলিকুয়েতা। ৭৫তম মিনিটে পাও টরেসের কাছ থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে ৩-১ ব্যবধান গড়েন ফেররান টরেস। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে ওরসিক শট নেন গোলের উদ্দেশ্যে। সেটি গোলের ভেতর থেকে আসপিলিকুয়েতা ফেরালেও গোল লাইন পেরিয়ে যাবার সিগনাল আগেই পেয়েছিলেন রেফারি। ইনজুরি সময় পাঁচ মিনিট যোগ করা হলে দ্বিতীয় মিনিটে পাসালিচের হেডে সমতায় ফেরে লুকা মদ্রিচের দল।
অতিরিক্ত সময়ে প্রথমার্ধে স্পেনের জয়ের নায়ক হয়ে আসেন মোরাতা। আগের ম্যাচগুলোয় ব্যর্থ হওয়ায় নিজেকে প্রমাণের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। শততম মিনিটে দানি ওলমোর পাস নিজের মতো পেয়েই এক শটে জালে জড়ান এই জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড। তিন মিনিট পরে ব্যবধান বাড়িয়েছেন ওয়ারজাবাল। ফলে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্পেন।
স্পেনের ২৩ শট গোলে নিলেও লক্ষ্যে ছিলো ১০টি। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়ার ১২টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিলো ৭টি। তবে ইউরোর প্রথম দল হিসেবে টানা দুই ম্যাচে পাঁচ গোল বা বেশি গোল করলো স্পেনই। একইসাথে চলতি ইউরোর আত্মঘাতী গোলের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯টি। ১৯৬০ সালের সেমিফাইনালে যুগোস্লাভিয়া ফ্রান্সকে ৫-৪ গোলে হারিয়েছিলো, যা ইউরো আসরের সর্বোচ্চ গোলের ম্যাচ। সেটি ছুঁতে না পারলেও এই ম্যাচে ৮ গোল দেখা গেছে যা রেকর্ড। সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ নক আউটের টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারানো প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড।