দেশজুড়ে ওমিক্রনের সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে গণপরিবহন। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে সরকারের এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। তবে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে বাসমালিকদের নিয়ে বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের পর গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হবে কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে সরকারের বিধিনিষেধের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়বে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো এবং চাহিদার তুলনায় পরিবহনের সংখ্যা কম হওয়ায় কর্মমুখী মানুষের ভোগান্তি বাড়তে পারে। এর আগে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধিতে দুর্ভোগে পড়েছিলেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
অন্যদিকে ভাড়া ঠিক রেখেই ১৫ জানুয়ারি থেকে ট্রেনেও অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। ট্রেনের ২৫ শতাংশ টিকিট অনলাইনে এবং ২৫ শতাংশ কাউন্টারে বিক্রি করা হবে। তবে লঞ্চে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা কবে থেকে কার্যকর হবে সেই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও দেশে এই রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেকসংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকা সনদধারী হতে হবে।
বিদেশ থেকে আগত যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ টিকা সনদ প্রদর্শন ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে। এছাড়া দোকান, শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টসমূহে ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও আসা ট্রাকের সঙ্গে শুধু চালক থাকতে পারবে। কোনো সহকারী আসতে পারবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
এর আগে গণপরিবহনে সরকারি বিধিনিষেধ তুলে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে পুরো যাত্রী নিয়ে চলার অনুমতি দেয় সরকার। তবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আবারও বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।