প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি দেশের পুনর্গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা লালন করছি, সেটিকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
শনিবার (নিউইয়র্ক সময়) যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, ‘দূর থেকে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার দিন শেষ। এখন আমাদের সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়া কয়েকজন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘উনারা এ সফরে সঙ্গে থাকায় আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। তিনি জানান, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। গত এক বছরে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) দ্বিগুণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আশিক চৌধুরী ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রবাসীদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ‘হারনেসিং ডায়াসপোরা অ্যাজ আ ন্যাশনাল অ্যাসেট’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
আলোচনায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের সম্পদ এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছেন।
আরেকটি প্যানেল সেশন পরিচালনা করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। আলোচনায় বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ নকীবুর রহমান এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ড. তাসনিম জারা বক্তব্য দেন।
তাসনিম জারা তার বক্তৃতায় নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার ওপর জোর দেন, যেখানে সবার অংশগ্রহণ ও মতামত থাকবে। তিনি বলেন, যখন সবাই একসঙ্গে কাজ করে ইতিহাস বদলায়। আমরা একসঙ্গে ইতিহাস বদলাবো।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি নানা আয়োজনমুখর ছিল। এতে ছিল প্লেনারি সেশন, নতুন ডিজিটাল অ্যাপ উদ্বোধন এবং প্রবাসী সম্পৃক্ততা। এতে প্রবাসীরা তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও উদ্বেগ ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি নীতিনির্ধারক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংলাপের সুযোগ পান। অনুষ্ঠানে ‘শুভেচ্ছা অ্যাপ’ উদ্বোধন করা হয়।
সূত্র: বাসস