বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীকে আবার চার দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার অর্থ পাচারের একটি মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ রিমান্ডে নেওয়ার এ নির্দেশ দেন।
এদিকে তৃতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার কথা শুনে আদালতের কাঠগড়ায় ঢলে পড়েন এনায়েত করিম। তিনি কাঠগড়ার ভেতরে রাখা বেঞ্চে শুয়ে পড়েন। পরে তাকে দায়িত্বরত পুলিশের সহযোগিতায় কাঠগড়া থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
সকালে এনায়েত করিম চৌধুরীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের পরিবারের অর্থ পাচার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম। পাশাপাশি পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
দুদকের বিশেষ পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ পুলিশের সাবেক আইজিপি (মহাপরিদর্শক) বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জা, বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা এনায়েত করিমের রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেছেন, মামলার তদন্ত চলাকালে বেনজীরের অর্থ পাচারের সঙ্গে আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতা পায় দুদক। কীভাবে বেনজীর বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন ও কার ভূমিকা কী ছিল, অর্থ পাচারের সঙ্গে কারা সংশ্লিষ্ট ছিল—সেসব তথ্য উদ্ধারের জন্য এনায়েত করিমকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় এনায়েত করিমকে ২২ সেপ্টেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়।
১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এনায়েত করিমকে রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রিপাড়ায় একটি প্রাডো গাড়িতে করে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। এ সময় পুলিশ তাঁর গাড়ি থামালে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন। তাঁর কাছ থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক বিশ্লেষণে ফোন থেকে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। পরে তাঁকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে ওই দিনই বিকেলে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরদিন তাঁর বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে রমনা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে দেওয়া হয়। পরে ১৭ সেপ্টেম্বর আবার তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।