• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলায় হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ


তাহনিয়া ইয়াসমিন
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২, ০৯:২১ পিএম
বইমেলায় হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ
ছবি: সংবাদ প্রকাশ

বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের উপর মৌলবাদী চক্রের সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকীতে অমর একুশে বইমেলায়।

লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের যৌথ উদ্যোগে রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টায় বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের তথ্য কেন্দ্রের সামনে আয়োজিত এক সভার শুরুতে লেখক হুমায়ুন আজাদকে স্মরণ করা হয়। এ সময় তার স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভায় বক্তব্য প্রদান করেন বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, কবি আসলাম সানী, কবি মোহন রায়হান, কবি প্রদীপ মিত্র, কবি হাসান আল আবদুল্লাহ, কবি প্রত্যয় জসীম, আকিদুল ইসলাম, হালিমদাদ খান, সাংবাদিক জই মামুন, মোশাররফ হোসেন, প্রকাশক হুমায়ুন কবীর, শায়লা রহমান তিথি, অমর একুশে বইমেলার সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ এবং হুমায়ুন আজাদের কন্যা মৌলি আজাদ।

এতে সভাপতিত্ব করেন আগামী প্রকাশনীর নির্বাহী ওসমান গনি। হুমায়ুন এছাড়া আজাদের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী শিপ্রা রহমান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “হুমায়ুন আজাদের হত্যাচেষ্টার বিচার অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং তার আদর্শে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই তাকে যথাযোগ্যভাবে স্মরণ করা হবে।”

এদিকে অমর একুশে বইমেলার ১৩তম দিন ছিল আজ। এদিন মেলা চলে দুপুর ২ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এছাড়া আজ (রোববার) নতুন বই এসেছে ৭২টি। এ পর্যন্ত মেলায় মোট বইয়ের সংখ্যা এক হাজার ৪৩৩ টি।

বিকাল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি : সত্যজিৎ রায় শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মইনুদ্দীন খালেদ।

এছাড়াও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিধান রিবেরু এবং মোস্তাক আহমাদ দীন। আর সভাপতিত্ব করেন ম. হামিদ।

এ সময় প্রাবন্ধিক মইনুদ্দীন খালেদ বলেন, “সত্যজিৎ রায় কিশোর বয়স থেকেই চলচ্চিত্রের রসাস্বাদন শুরু করেন। চলচ্চিত্র-বিদ্যায় তিনি শিক্ষিত ও দীক্ষিত হয়েছেন চলচ্চিত্র বিষয়ে গ্রন্থ পাঠ করে। সুখ-দুঃখের পালাবদলে বিবৃত হয়েছে তার চলচ্চিত্রিক গুণমণ্ডিত পথের পাঁচালীর কাহিনি। মানুষ-প্রকৃতি, নিসর্গ-প্রকৃতি ও অন্যান্য প্রাণিকুলের সমন্বিত ভাষ্য পথের পাঁচালী। সত্যজিতের দৃশ্য পরিকল্পনায় বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো একটি ক্ষুদ্র বা ছোটো অনুষঙ্গ থেকে ক্রমান্বয়ে ব্যপ্ততর পটভূমে প্রবেশ। শব্দ ও চিত্রকে উপরিতলের রূপ থেকে মুক্ত করে গ্রাফিক্সের সূক্ষ্মতর ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সত্যজিৎ অভূতপূর্ব সার্থকতার পরিচয় দিয়েছেন।”

এছাড়া আলোচকবৃন্দ বলেন, “মহৎ শিল্পীগণই চলচ্চিত্রে দৃশ্যের পর দৃশ্য জাদুকরি মুহূর্ত তৈরি করতে পারেন। সামগ্রিকভাবে সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র ও অন্যান্য শিল্পকর্ম বিবেচনা করলে দেখা যায়, সর্বক্ষেত্রে তিনি যে জাদুময়তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন তা শিল্পবোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষকেও মন্ত্রমুগ্ধ করেছে।”

সভাপতির বক্তব্যে ম. হামিদ বলেন, “বাংলা চলচ্চিত্রের একজন মহীরুহ সত্যজিৎ রায় তার প্রতিভার প্রকাশ ঘটিয়েছেন সাহিত্য, সংগীতসহ আরও নানাক্ষেত্রে। বাংলা চলচ্চিত্রকে তিনি বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছেন যা বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য অশেষ গৌরবের বিষয়।”

অন্যদিকে লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন আমিনুর রহমান সুলতান এবং মোস্তাক আহমাদ দীন।

অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন গোলাম কিবরিয়া পিনু এবং শিহাব শাহরিয়ার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী কাজি মাহতাব সুমন।

এদিন সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল জাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’-এর পরিবেশনা।

সংগীত পরিবেশন করেন কাঙ্গালিনী সুফিয়া, আমজাদ দেওয়ান, রুশিয়া খানম, ড. বিশ্বজিৎ রায়, মো. দেলোয়ার হোসেন বয়াতি, সোনিয়া বেগম, মমতা দাসী বাউল এবং মো. আনোয়ার হোসেন। এ সময় যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সেন (মন্দিরা), অরূপ কুমার শীল (দোতারা), মো. হাসান মিয়া (ঢোল), মো. হাসান আলী (বাঁশি)। 

আগামীকাল সোমবারের অনুষ্ঠানসূচি

আগামীকাল সোমবার অমর একুশে বইমেলার ১৪তম দিন। মেলায় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিকাল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, শামসুজ্জামান খান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন গোলাম মুস্তাফা ও এম আবদুল আলীম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সারওয়ার আলী এবং সাইমন জাকারিয়া। সভাপতিত্ব করবেন মুনতাসীর মামুন। আর সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

Link copied!