সন্তান বড় হয়। ছোটবেলা থেকে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। সন্তানের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার যত্নের ধরণও পাল্টায়। এক সময় সন্তান বয়ঃসন্ধিকালে এসে পড়ে। এই সময়টা অন্যরকম। হঠাত্ই পরিবর্তন হতে থাকে তার শারীরিক ও মানসিক গঠনে। পড়াশোনার চাপ তো থাকেই, সঙ্গে থাকে হরেক চিন্তাভাবনা। এছাড়াও সব কিছুতে খুঁতখুঁতে থাকা, বড়দের সঙ্গে তর্ক করা এবং নিজেকে সবার থেকে আলাদা করার চেষ্টা থাকে। সন্তানের এমন অভ্যাস অভিভাবকদের ভাবিয়ে তোলে। সন্তানের বাহ্যিক কিছু পরিবর্তনে চিন্তিত হয়ে পড়ে অভিভাবকরা। তাই বয়ঃসন্ধিকালের এমন পরিবর্তনে সন্তানকে কীভাবে আগলে রাখবেন তা নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।
- সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চেহারায় পরিবর্তন আসে। এই সময় অনেক সন্তান হীনমন্যতায় ভোগে। নিজের চেহারা নিয়ে মনের মধ্যে কোনও খারাপ লাগা জন্মাচ্ছে। আবার নিজের পরিবার বা নিজের পোশাক নিয়েও সংকোচবোধ থাকতে পারে। এসব দিকে খেয়াল রাখুন।
- বয়ঃসন্ধির সময় সন্তানের শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। খেয়াল রাখুন এই পরিবর্তন যেন সন্তানের উপর নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। এমন কিছু যেন সন্তানের আত্মসম্মানে আঘাত না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- স্কুলে কিংবা আশপাশের বন্ধুদের সঙ্গে মিশবে আপনার সন্তান। খেয়াল রাখুন কোনও পরিস্থিতিতে পরে আপনার সন্তান যেন হেনস্থার শিকার না হয়।
- আপনার সন্তানের সবধরণের কর্মকাণ্ডে নজর রাখুন। কারণ একাকিত্ব, উদ্বেগ, অবসাদ আপনার সন্তানকে এই সময় গ্রাস করতে পারে সহজে।
- পড়াশোনা প্রতিযোগিতা থাকা ভালো। কিন্তু তা যেন সন্তানের মানসিক চাপে পরিণত না হয় খেয়াল রাখুন। পড়াশোনায় ব্যর্থ হলে শাসন নয় বরং সহযোগিতা করুন। কারণ জীবনে ব্যর্থ হতে শেখাও জরুরি। তবেই সাফল্যের মর্যাদা বোঝা যায়।
- সমবয়সী কিংবা বড় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় পড়ে আপনার সন্তান ধূমপান করতে পারে। তাই আগেই ধূমপান ও মদ্যপান সম্পর্কে সন্তানকে অবগত করুন। সন্তান এসব অভ্যাস থেকে দূরে থাকবে। কোনটা ভাল বা কোনটা খারাপ সেটুকু বুঝিয়ে দেওয়া জরুরি।
- বয়ঃসন্ধিকালে বেশির ভাগ ছেলে মেয়েরাই একটু খিটখিটে হয়। তাদের কেউ বোঝে না বলে অভিযোগ করে। অভিভাবকের কথার গুরুত্ব দেয় না। এই অবস্থায় সন্তানের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন। তার অভিযোগ শুনুন এবং চাহিদা পূরণের চেষ্টা করুন।
- সন্তান অনেক সময় বাবা-মাকে মনের কথা বলতে না পেরে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে। ভালো বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করলে ভালো পরামর্শ পাবে। কিন্তু খারাপ বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করলে কেউ সুযোগ নিতে পারে। তাই সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠার সময় এখনই। বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠুন।
আপনার মতামত লিখুন :