ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। ভারত সরকার এটি পর্যালোচনা করছে বলেও জানান তিনি। সোমবার দিল্লির সাউথ ব্লকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাবের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিক্রম মিশ্রি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে নির্বাচিত নতুন সরকারের সঙ্গে ভারত কাজ করবে জানিয়ে, দ্রুত সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানান বিক্রম মিশ্রি।
ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সফরের দ্বিতীয় দিনে দিল্লিতে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে মতবিনিময় করেন বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাংবাদিকেরা। নানা বিষয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। উঠে আসে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের টানাপোড়েনের বিষয়টিও। দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয়, বিচারপ্রক্রিয়া, জাতীয় নির্বাচন, সীমান্ত হত্যা-সহ সব বিষয়ে তুলে ধরেন ব্যাখ্যা।
বাংলাদেশে দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা প্রতিবেশী দেশটির। কীভাবে জনগণ ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে পারে সে বিষয়েও মতামত তুলে ধরেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘ভারত কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে গুরুত্ব দেয়, এটি বাংলাদেশের অত্যন্ত ভুল ধারণা। ভারত চায় যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে নির্বাচন। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। ভারত আশা করছে সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হোক—এটাই আমরা চাই। নির্বাচিত যেকোনো সরকারের সঙ্গে কাজ করব আমরা। মনে রাখা উচিত, সম্পর্ক ঠিক রাখতে উভয় পক্ষেরই প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য এড়িয়ে চলতে হবে।’
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের অনুরোধের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে ভারত। এটা আইনি এবং বিচারিক বিষয়, তাই এ মুহূর্তে এর থেকে বেশি কিছু বলতে চাই না।’
পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের নতুন সমীকরণ প্রসঙ্গে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ভারত কখনই বাংলাদেশের সঙ্গে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মাথা ঘামায় না। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেয় ভারত। এ অঞ্চলে উগ্রবাদের উত্থান চায় না দিল্লি। বাংলাদেশের সঙ্গেও সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি তার।