দেশের বাজারে সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। এতে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৩ হাজার ১৫০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ৭২৬ টাকা হয়েছে। দেশের বাজারে এই প্রথম এক ভরি সোনার দাম দুই লাখ টাকা হলো।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সোনার ভরি ছিল ১৭০ টাকা। ২০০০ সালে সোনার দাম ছিল ৬ হাজার ৯০০ টাকা। এক দশক পর, অর্থাৎ ২০২০ সালে দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯ হাজার ৮৬৭ টাকা হয়। ২০২৩ সালে দেশে প্রথমবারের মতো সোনার দাম এক লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে পরের দুই বছরেই সোনার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। আর স্বাধীনতার পর থেকে হিসাব করলে সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ১৮১ গুণ।
এদিকে সোমবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৫১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সেই হিসাবে মঙ্গলবার থেকে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৫০ টাকা, ২১ ক্যারেটে ৩ হাজার ১০ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ৫৭৮ টাকা দাম বাড়বে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়বে।
বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির সঙ্গে সোনার দামের সম্পর্ক রয়েছে। অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা মানে সোনার বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। কারণ, অস্থির সময়ে বিভিন্ন দেশ সোনায় বিনিয়োগ করে। ঐতিহাসিকভাবেও দেখা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সোনার দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়, অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৭০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বিশ্ববাজারে কয়েক দিন ধরে সোনার দাম টানা বাড়ছে। আজ সোমবার একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৯৫২ ডলারে দাঁড়ায়। ১ অক্টোবর সোনার দাম ছিল ৩ হাজার ৮৭১ ডলার।