• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো যেভাবে তুলে ধরেছিল


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৩, ০১:৪৫ পিএম
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো যেভাবে তুলে ধরেছিল

দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম, আত্মত্যাগ আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই অগ্নিপথ পাড়ি দেওয়ার সময় বিভিন্ন দেশ ও বিভিন্ন ব্যক্তি আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। তাদের সহযোগিতা যুদ্ধে জয়ের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা দিয়েছে। দেশের বাইরেও গণমাধ্যমগুলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কেমন সংবাদ প্রকাশ করেছে, কিংবা মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি গণমাধ্যমগুলোর অবদান কী রকম? সেটি নিয়ে আমাদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।

ইন্টারনেট, পত্রপত্রিকা কিংবা বইপুস্তুক ঘেঁটে যতটুকু তথ্য জানতে পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতে আমরা পেয়েছি, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে যে গণহত্যা, ধর্ষণ, বর্বরতা, ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা বহির্বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর তাদের এমন সহযোগিতা মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে বিশ্বজনমত গঠনে সহায়তা করে। বিশ্ববাসী মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরেছে।

মূলত ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর থেকেই বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর সাংবাদিকরা বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) আসতে শুরু করেন। এরপর থেকেই তারা বাংলাদেশের সব খবর বিশ্বের মানুষের কাছে পাঠাতে শুরু করেন।

কিন্তু ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরুর আগ মুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিদেশি সব সাংবাদিককে হোটেলে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বাংলাদেশে কী ঘটছে, এ খবর বহির্বিশ্বের মানুষ যাতে না জানতে পারে, এ কারণে ঢাকায় থাকা অন্তত ২০০ বিদেশি সাংবাদিককে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আটকে রাখা হয়েছিল। পাশাপাশি সব বিদেশি সাংবাদিকদের পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের খবরাখবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো কয়েকটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে তুলে ধরে ছিল। এগুলো হলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যা। ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী লাখ লাখ মানুষের দুরবস্থা ও ত্রাণ কার্যক্রম। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের ব্যাপারে অন্যান্য দেশের সরকারের ভূমিকা। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য। পাকিস্তানের কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও চীনের সমর্থন ও সহায়তা এবং ১৬ ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিজয় ও বিজয়-পরবর্তী পরিস্থিতি।

কলকাতার সাংবাদিকরা সে সময় বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের কলমযোদ্ধা হয়ে উঠেছিলেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সব খবর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। ২৬ মার্চ কলকাতার আকাশবাণী, বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গুরুত্বসহকারে গণহত্যার বিবরণ প্রচার করতে থাকে।

পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার, দেশ, ত্রিপুরার সংবাদ, জাগরণ, গণরাজ. রুদ্রবীণা, নাগরিক জনপদ, সাপ্তাহিক সমাচার, দেশের কথা, সীমান্ত প্রকাশ ও ত্রিপুরার কথা নামে পত্রিকাগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনে সহায়তা করেছে।

বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যে খবর ছাপা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক দলিল।

শুরুটা হয়েছিল ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যা নিয়ে। ওই দিন রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা নিয়ে ২৭ মার্চ ইউরোপের বিভিন্ন পত্রিকায় খবর ছাপা হয়। এর মধ্যে ২৭ মার্চ ১৯৭১ সালে ডেইলি টেলিগ্রাফে ‘পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত’, দ্য বোস্টন গ্লোবে ‘পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন: গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত’, দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে ‘পূর্ব পাকিস্তানে বিদ্রোহীদের নেতা গ্রেপ্তার’, ইভনিং এক্সপ্রেসে ‘পূর্ব পাকিস্তানে হয়তো ১০ হাজার মানুষ নিহত’, ব্যাংকক পোস্টে ‘পাকিস্তান সিভিল ওয়ারের প্রান্তে’ শিরোনামে খবর ছাপা হয়েছিল। যা দেখে বিশ্ববাসী সহজেই অনুমান করতে পেরেছেন পাকিস্তানি বাহিনীর কর্মকাণ্ড।

লন্ডনের ‘দ্য অবজারভার’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ২৮ মার্চ একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়, অভ্যুত্থানের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের অবস্থান সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তান সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, শেখ মুজিবকে তারা ঢাকায় তাঁর নিজ বাসভবনে আটকে রেখেছে। অন্যদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, তিনি চট্টগ্রাম রয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেছেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, উপযুক্ত সময়ে ব্যবস্থা নেব।” একই দিনে সানডে টেলিগ্রাফে ‘রাত্রির পর ঢাকা শহর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, বিদ্রোহী শহরে পাকিস্তানের বোমাবর্ষণ (চট্টগ্রামকে বোঝানো হয়েছে) এবং পূর্ব পাকিস্তানে কারা মার খাচ্ছে?’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করা হয়েছিল। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, পূর্ব পাকিস্তানে মানুষের ওপর সাঁজোয়া বাহিনী ব্যবহার করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা ধারণার চেয়ে অনেক বেশি।

পরদিন অর্থাৎ ২৯ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে পূর্ব পাকিস্তান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি হবে, পূর্ব পাকিস্তানের সংঘাতে মায়া-দয়া বলে কিছু নেই, পূর্ব পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক যাতায়াতের সব পথ বন্ধ। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের শিরোনাম ছিল, ‘ট্যাংকের বিরুদ্ধে কেবল লাঠি আর বল্লম’। দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে ‘পূর্ব পাকিস্তানে চরম অরাজকতা’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া দ্য এইজ অস্ট্রেলিয়া সংবাদ প্রকাশ করে, বিভক্ত জাতি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে লিপ্ত হলো, পাকিস্তানের দুঃখজনক পরিণতি এবং আলোচনা স্থগিত করে যখন ট্যাংক নামানো হলো। ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেস পত্রিকার ২৯ মার্চ ১৯৭১ সংখ্যায় মুদ্রিত সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রতি স্বীকৃতি ও সহায়তার আবেদন জানিয়েছে’। একটি শিরোনামে এ রকম স্পষ্টভাবে পূর্ব পাকিস্তানের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরার চমৎকার উদাহরণ দুর্লভ।

লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফে ৩০ মার্চ সাংবাদিক সাইমন ড্রিং এক প্রতিবেদনে লিখেছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঠান্ডা মাথায় ২৪ ঘণ্টা অবিরাম গোলাবর্ষণ করে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে হত্যা করে। ‘চট্টগ্রামে তুমুল সংঘাত, আগুন জ্বলছে’ (৩১ মার্চ, দ্য গার্ডিয়ান), একই দিন ‘পাকিস্তান রক্ষার নামে যা হচ্ছে’ শিরোনামে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে খবর ছাপা হয়েছিল।

টেলিগ্রাফের ১ এপ্রিলের একটি প্রতিবেদনে ২৫ মার্চের গণহত্যা নিয়ে বলা হয়, ‘নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার।’ অস্ট্রেলিয়ার ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ পত্রিকা জানিয়েছিল, শুধু ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা।

টাইম সাময়িকী ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্ভবত কিছু সময়ের জন্য ঢাকাসহ পূর্বাংশের শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে। কিন্তু অনির্দিষ্টকাল ৫৪ হাজার বর্গমাইলের বিশাল অঞ্চল বাগে রাখতে পারবে না। কারণ, ব্রিটিশরাজ ১৯১১ সালে বাঙালির ভয়ে রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তর করেছিল। একই দিন নিউজউইক ‘একটি আদর্শের মৃত্যু’ সংবাদে বাঙালির আত্মবিশ্বাস, গণজাগরণ ও পাকিস্তানিদের প্রতি তাদের ঘৃণার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়।

১৮ এপ্রিল লন্ডনের দ্য অবজারভার ‘স্বপ্নভঙ্গের পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করে। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে হত্যার খবর ছাপা হয়েছিল।

১৯৭১ সালের ১৩ জুন দ্য সানডে টাইমস ‘গণহত্যা’ নামে ১৪ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদন ছাপে। এতে মার্চের শেষে পশ্চিম পাকিস্তানিদের পরিকল্পিতভাবে হাজার হাজার বেসামরিক লোককে হত্যা, ধর্ষণ, ৫০ লাখের বেশি মানুষের শরণার্থী হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছিল।

১৯ জুন এক প্রতিবেদন দ্য স্পেকটেটর উল্লেখ করে, পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানে ব্যাপক হারে যে বর্বরোচিত গণহত্যা চালাচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই বিশ্বের সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যা। পরদিন দ্য সানডে টাইমস বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন করছে তুলে ধরে ‘পাকিস্তানে সংঘবদ্ধ নির্যাতন’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

টরন্টো টেলিগ্রাম ১৯৭১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এক সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে ৩০ লাখ টন খাদ্য ও ভারতে ৮০ লাখ শরণার্থীর খাদ্যের ব্যবস্থা করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে।
ভারতের নয়াদিল্লি থেকে ‘দ্য উইকলি নিউএজ’ পত্রিকা ২৬ সেপ্টেম্বর ‘বিজয় নিশ্চিত’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে তারা উল্লেখ করে, “গত সপ্তাহে আমরা বাংলাদেশের ছয় মাসের লড়াইয়ের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখতে পাই, মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমানে যেভাবে হয়রানি করছে, তা আরও তীব্র হলে সামরিক দিক থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ভেঙে পড়বে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ নেই। এখন কাজ হচ্ছে এটিকে ত্বরান্বিত করা।

ওয়াশিংটন পোস্ট ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘লি লেসকেজ’-এর লেখার শিরোনাম ছিল ‘পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধ শেষ : উল্লাস আর পুষ্প সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে ভারতীয় বাহিনীর ঢাকায় প্রবেশ।’ একই দিন লন্ডন টাইমসে ‘পাকিস্তানি জেনারেল উদগত কান্না চাপছিলেন’ শিরোনামে সাংবাদিক ‘পিটার ও লাওলিন’ লেখেন, ‘পশ্চাৎ থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছিল। অস্তগামী সূর্যের আলোয় ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে পাতা টেবিল ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল এক দঙ্গল মানুষ। লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজি আত্মসমর্পণের দলিলে সই করছিলেন। শত শত বাঙালি জয় বাংলা ধ্বনিতে ফেটে পড়ে।’ এ ছাড়া লন্ডনের ‘ডেইলি মেইল’ পত্রিকাতে আত্মসমর্পণের ওপর প্রথম প্রতিবেদন করেন সাংবাদিক ডেনিস নিল্ড। একই রকম আরও দুটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ১৭ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক টাইমসে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিন নতুন বাংলাদেশ জন্মের কথা বিশ্ববাসীকে জানায় ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর। তারা ‘যুদ্ধের ভেতর দিয়ে একটি জাতির জন্ম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপে। এতে তারা লেখে, ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বাংলা’।

বিজয় অর্জিত হওয়ার পর ব্রিটিশ পত্রিকা লন্ডন টাইমস লিখেছিল, ‘ইফ ব্লাড ইজ দ্য প্রাইস অব ইনডিপেনডেন্স দ্যান বাংলাদেশ হ্যাজ পেইড দ্য হাইয়েস্ট প্রাইস ইন হিস্ট্রি।’ এর মাধ্যমে আসলে সহজেই অনুমেয় কী পরিমাণ আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।

যদিও পাকিস্তানের সংবাদপত্রগুলোতে শুরুর দিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল, আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, শেখ মুজিবকে ইয়াহিয়া কর্তৃক পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী সম্বোধন এবং ভুট্টোর অগণতান্ত্রিক দাবি” ইত্যাদি নিয়ে অনেক সংবাদ ও সম্পাদকীয় থাকলেও পরবর্তী সময়ে সেন্সর আরোপিত হলে এবং পিপিপির দলীয় স্বার্থে সংবাদের ধরন বদলে যেতে থাকে 

Link copied!