পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায় যাতে তাদের রীতি মেনে বিয়ে করতে পারেন সে লক্ষ্যে দেশটির সংসদে হিন্দু বিয়ের আইন পাশ হয়েছিল ২০১৭ সালে। যদিও আইনটি পাশ হওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও তা স্বীকৃতি পায়নি। অবশেষে ইসলামাবাদ প্রশাসন হিন্দু বিয়ে আইনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এখন থেকে দেশটির সংখ্যালঘু হিন্দুরা ওই আইন অনুসারে বিয়ে করতে পারবেন। এর ফলে পঞ্জাব, খাইবারপাখতুনখাওয়া, বেলুচিস্তানে ‘হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট ২০১৭’ কার্যকর করা হবে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন অনুযায়ী, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার বিয়ের নূন্যতম বয়স ১৮ বছর। বিধবা হওয়ার ছয় মাস পর ফের বিয়ে করা যাবে। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আইনের মধ্যে থাকা নিয়মগুলোর কথা তুলে ধরা হয়েছে।
আইন অনুসারে একজন পুরোহিত বা পণ্ডিত এই বিয়ে দিতে পারবেন। তবে তাকে অবশ্য পুরুষ হতে হবে এবং ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট জানাশোনা থাকতে হবে। আইনে উল্লেখ করা হয়েছে, পণ্ডিত ওই পরিবারের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনো অর্থ নিতে পারবেন না। তবে কেবলমাত্র সরকারি নির্ধারিত যে ফি সেটাই তিনি নিতে পারবেন।
স্থানীয় থানা থেকে তাকে চারিত্রিক সনদপত্র নিতে হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০জন সদস্যের কাছ থেকেও তাকে সার্টিফিকেট নিতে হবে। তারপর তিনি বিয়ে দিতে পারবেন। বিয়ে দেওয়ার জন্য ওই পণ্ডিতের লাইসেন্স বা ছাড়পত্র থাকতে হবে। তবে তার মৃত্যুর পরে অথবা তার লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পরে ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুসারে যে বিয়েগুলো তিনি দিয়েছিলেন তার নথি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন কাউন্সিলের কাছে তুলে দেওয়া হবে। সেই নথি আবার তাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আইসিটির ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি মেহেফুজ পিরাচা ডনকে জানিয়েছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরী। পঞ্জাব, বেলুচিস্তান, ও খাইবারপাখতুনখাওয়া এলাকায় এ আইনকে প্রয়োগ করা যাবে। ন্যাশনাল লবিং ডেলিগেশন ফর মাইনরিটি রাইটসের ভিত্তিতে এ ম্যারেজ রুলকে আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে হিন্দু ছাড়া অন্য নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ের নূন্যতম বয়স ১৬। পাঞ্জাব প্রদেশ, খাইবারপাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা অহরহ ঘটে। তাই সেখান থেকে অনেক হিন্দু ইসলামাবাদ চলে গেছেন।