• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পাকিস্তানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে পরপর বিস্ফোরণ, নিহত ২৮


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪, ০৪:৩৯ পিএম
পাকিস্তানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে পরপর বিস্ফোরণ, নিহত ২৮

পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের পিশিন শহরে আসফান্দ ইয়ার খান কাকার নামে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে পরপর দুই দফা বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০ জন।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে পিশিনের খাজোনি এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে

বালুচিস্তানের পুলিশ বলেছে, বুধবার সকালের দিকে প্রদেশের পিশিন এলাকার স্বতন্ত্র প্রার্থী আসফান্দায়ার কাকারের নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটেছে। পিশিনের ডেপুটি কমিশনার জুম্মা দাদ খান বলেছেন, এই বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত ও আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন।

প্রথম বিস্ফোরণের পরপরই কিলা সাইফুল্লাহ জেলায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কিলা সাইফুল্লাহর ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির বাজাই দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনকে বলেন, দ্বিতীয় বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির রাজনৈতিক দল জেইউআই-এফের নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

৮ লাখ ৮১ হাজার ৯১৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশ পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যা ২৪ কোটি ১০ লাখ। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) তথ্য অনুযায়ী, মোট এই জনসংখ্যার মধ্যে ভোটারের সংখ্যা অর্ধেকের কিছু বেশি— ১২ কোটি ৮০ লাখ। তাদের একটি বিশাল অংশ আগামীকাল ভোট দেবেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক মাস ধরে ব্যাপক সহিংসতা চলছে। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে মাঝে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তিনি।

এক সময় দুর্নীতির দায়ে রাজনীতিতে আজীবন নিষেধাজ্ঞার দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নওয়াজ শরিফ লন্ডন ও দুবাইয়ে চার বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে গত বছরের শেষের দিকে দেশে ফিরেছেন। নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞা কাটাতে সক্ষম হয়েছেন এবং এবারের নির্বাচনে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থিতাও করছেন।

আর তিনি দেশে ফেরার কয়েক মাস আগে কারাগারে গেছেন ইমরান খান। রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস (সাইফার) এবং তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে যথাক্রমে ১০ ও ১৪ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। এই নির্বাচনে প্রার্থিতা করতে পারছেন না তিনি।

তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) যেসব প্রার্থী এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের দলের নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন ও আদালত। ফলে নিজেদের বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থীদের তুলনায় বেশ বেকায়দায় আছেন পিটিআই প্রার্থীরা।

কিন্তু তারপরও নির্বাচন নিয়ে পাকিস্তানে যতখানি উত্তেজনা রয়েছে— তা এই দু’টি দলকে ঘিরে। অসম হলেও প্রকৃত লড়াই হচ্ছে পিএমএলএন এবং পিটিআইয়ের প্রার্থীদের মধ্যে। একদিকে পিএমএলএন পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এবং অন্যদিকে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান পাকিস্তানের শীর্ষ জনপ্রিয় নেতা।

পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে ওয়াশিংটনের হাডসন ইনস্টিটিউটের গবেষক হুসাইন হাক্কানি বলেন, এই নির্বাচন থেকে আসলে ভবিষ্যতের কোনো দিশা পাওয়ার আশা খুবই ক্ষীণ। কারণ নামে নির্বাচন হলেও এটি আসলে দুই রাজনৈতিক নেতার মধ্যকার লড়াই।

Link copied!