• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

নাইন ইলেভেনের ২১ বছর


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২, ০৯:৩৭ এএম
নাইন ইলেভেনের ২১ বছর

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় ছিল ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের দিনটি। এ দিন স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সাক্ষী হয়েছিল মার্কিনীরা।

২০০১ সালের দিনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ চারটি স্থাপনায় একযোগে বিমান হামলা চালিয়েছিল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, গোটা বিশ্ব থমকে যায় টুইন টাওয়ার হামলার ভয়াবহতা দেখে।

১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার পর যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই ক্যালিফোর্নিয়াগামী চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে আল-কায়েদার সদস্যরা।

সন্ত্রাসীদের চারটি দলেই একজন বিমান চালানোর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিনতাইকারী ছিল। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের চারটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় একযোগে বিমানগুলো নিয়ে হামলা চালায় আল-কায়েদা।

সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে প্রথম বিমানটি আঘাত হানে ম্যানহাটনের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নর্থ টাওয়ারে। ১৭ মিনিট পর দ্বিতীয় বিমানটি নিয়ে জঙ্গিরা হামলা চালায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের আরেকটি ভবন সাউথ টাওয়ারে। দেড় ঘণ্টার মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়ে ধসে পড়ে টুইন টাওয়ারের ভবন দুটো।

তৃতীয় ফ্লাইটটি ডুলস বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পর ওহাইওতে ছিনতাই হয়। সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে এটি ভার্জিনিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তর পেন্টাগনের পশ্চিম দিকে আঘাত হানে।

এরপর চতুর্থ বিমানটি রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির দিকে যাওয়ার পথে সকাল ১০টায় পেনসিলভেনিয়ার কাছে একটি মাঠে বিধ্বস্ত হয়। বিমানের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে বিমানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করলে হামলার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। যদিও প্রাণে বাঁচতে পারেননি বিমানের কোনো যাত্রী।

আফগানিস্তান থেকে এ হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছিল আল-কায়েদা। উগ্র ইসলামপন্থী জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান ওসামা বিন লাদেন ও কমান্ডার খালিদ শেখ মোহাম্মদ ছিলেন মূল পরিকল্পনাকারী।

ধারণা করা হয়, আল-কায়েদার শেষ লক্ষ্যবস্তু ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউস কিংবা পার্লামেন্টের ক্যাপিটল হিল ভবন।

বিবিসির তথ্যমতে, ১৯ হামলাকারীর সঙ্গে এ হামলায় প্রাণ হারায় ২ হাজার ৯৭৭ জন। নিহতদের বেশির ভাগই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাসিন্দা।

চার বিমানের ২৪৬ জন যাত্রী ও সব ক্রু নিহত হন। কেবল টুইন টাওয়ারের দুই ভবনে মারা যান ২ হাজার ৬০৬ জন। পেন্টাগনের হামলায় প্রাণ হারান ১২৫ জন। হতাহতের মধ্যে ৭৭টি দেশের নাগরিক ছিলেন।

এ হামলার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আল-কায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করতে ও ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট। শুরু হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান ‘ওয়ার অন টেরর’।

অভিযান শুরুর প্রায় ১০ বছর পর ২০১১ সালে পাকিস্তানে অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন সেনারা। নাইন ইলেভেন হামলার আরেক পরিকল্পনাকারী খালিদ শেখ মোহাম্মদকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

নিউইয়র্কের নাইন ইলেভেন হামলার সেই স্থানে এখন নিহতদের স্মরণে গড়ে তোলা হয়েছে একটি যাদুঘর ও স্মৃতিসৌধ। ভবনগুলো নির্মিত হয়েছে ভিন্ন নকশায়। টুইন টাওয়ারের স্থলে রয়েছে ১,৭৭৬ ফুট উঁচু ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা ফ্রিডম টাওয়ার।

Link copied!