• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পিরিয়ডে কী খাবেন, কী খাবার এড়িয়ে যাবেন


নাইস নূর
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৩, ০২:১২ পিএম
পিরিয়ডে কী খাবেন, কী খাবার এড়িয়ে যাবেন

প্রতিটি নারীর জন্য পিরিয়ড অনেক চ্যালেঞ্জিং। এটা নিয়ে লজ্জা বা জড়তার কিছুই নেই। এ সময় নারীদের শরীরের অস্বস্তিকর কিছু উপসর্গ হয়। কারো কারো মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, ক্লান্তি, দুর্বলতা, পেট ব্যথা, হজমে সমস্যা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব এবং মুড সুইং হতে পারে। মানসিক ও শারীরিক যত্নের পাশাপাশি এ সময় নারীদের খাবারের প্রতি সচেতন থাকতে হবে। এ সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কিছু খাবার খেতে হবে আবার কিছু খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। চলুন জেনে নিই, পিরিয়ডে কী খাবেন, আর কী খাবার এড়িয়ে যাবেন।

 

পিরিয়ড হলে যা খাবেন

পানি 
পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। আর পিরিয়ডের সময় প্রচুর পানি পান করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে। এতে ডিহাইড্রেশন হবে না ফলে মাথাব্যথার হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারে।

ফল
শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য তরমুজ, শসা খেলে ভালো লাগবে। এ সময় মিষ্টি ফল গ্রহণ করলে মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকবে না।

সবুজ শাকসবজি
পিরিয়ডের সময় আয়রনের মাত্রা কমে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার। বিশেষ করে যদি আপনার মাসিক প্রবাহ ভারী হয়। এতে ক্লান্তি, শরীরে ব্যথা এবং মাথা ঘোরা হতে পারে। পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি খেলে আয়রনের মাত্রা বাড়াতে পারে। খেতে পারেন পালং শাক। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে।

আদা
আদা বমি বমি ভাব কমাতে পারে। ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের সময় বমি বমি ভাব কমায় আদা। তবে প্রতিদিন চার গ্রামের বেশি আদা খ্ওায়া ঠিক হবে না। বেশি খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে।

মুরগি
মুরগি হল আয়রন এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। প্রোটিন স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।   
পিরিয়ডের সময় তৃপ্ত থাকতে সাহায্য করতে পারে মুরগি। তৃষ্ণাও কমাতে পারে।

মাছ
মাছে আছে আয়রন, প্রোটিন এবং ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। আয়রনের মাত্রা  হ্রাসকে প্রতিরোধ করবে মাছ। ২০১২ সালের একটি গবেষণা অনুসারে ওমেগা-৩ পিরিয়ডের ব্যথার তীব্রতা কমাতে পারে। এছাড়া ২০১৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওমেগা -৩ বিষন্নতা কমাতে পারে। মেজাজও নিয়ন্ত্রণ রাখে।

হলুদ
হলুদ প্রদাহ বিরোধী মশলা হিসাবে পরিচিত। ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় পিএমএস লক্ষণগুলির উপর কারকিউমিনের প্রভাবের দিকে নজর দেওয়া হয়েছিল এবং দেখা গেছে যে যারা কারকিউমিন গ্রহণ করেছিলেন তাদের কম গুরুতর লক্ষণ ছিল।

ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকলেট আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। ২০১০ সালের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে ম্যাগনেসিয়াম পিএমএস লক্ষণগুলির তীব্রতা হ্রাস করেছে।

বাদাম
বেশিরভাগ বাদাম ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এতে প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম এবং বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে।

মসুর ডাল এবং মটরশুটি
মসুর ডাল এবং মটরশুটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। আয়রনও রয়েছে। শরীরে আয়রনের মাত্রা কম থাকলে মসুর ডাল এবং মটরশুটি খেতে হবে।

দই
দইতে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। এছাড়া শরীরের ব্যাকটেরিয়া দূর করে।


পিরিয়ডে যা খাবেন না

লবন 
পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত লবন খেলে শরীর ফুলে যেতে পারে। কারণ লবন শরীরে পানি ধরে রাখতে পারে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে সোডিয়ামযুক্ত উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

চিনি
পরিমিত পরিমাণে চিনি খ্ওায়া ভালো। তবে অধিক পরিমানে খেলে মেজাজ খারাপ হতে পারে। আপনি যদি আপনার পিরিয়ডের সময় মেজাজ, হতাশাগ্রস্ত বা উদ্বিগ্ন বোধ করেন তাহলে চিনি খাবেন না।

কফি
কফি মাথা ব্যথাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে ক্যাফিন প্রত্যাহার করা মাথাব্যথার কারণও হতে পারে। তাই আপনি যদি দিনে কয়েক কাপ খেতে অভ্যস্ত হন তবে কফি পুরোপুরি বাদ দেবেন না। কফির কারণেও হজমের সমস্যা হতে পারে। যদি আপনার পিরিয়ডের সময় ডায়রিয়া হওয়ার প্রবণতা থাকে তাহলে আপনার কফি খাওয়া কমিয়ে দিলে তা হওয়া বন্ধ হতে পারে।

অ্যালকোহল
অ্যালকোহল শরীরের উপর অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যা পিরিয়ডের লক্ষণগুলিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। অ্যালকোহল ডিহাইড্রেট করতে পারে যা মাথা ব্যথাকে আরও খারাপ করতে পারে এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। এটি খেলে হজম সংক্রান্ত সমস্যা যেমন ডায়রিয়া এবং বমি বমি ভাব ও ক্লান্তি হতে পারে।

মসলাযুক্ত খাবার
অনেক লোকের মশলাদার খাবার পেট খারাপ করে। তাদের ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা এবং এমনকি বমি বমি ভাব হয়। পেটে যদি মশলাদার খাবার সহ্য করতে কষ্ট হয় তবে সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া ভালো হবে।

লাল মাংস
পিরিয়ডের সময় শরীর প্রোস্টাগø্যান্ডিন তৈরি করে। এই যৌগগুলি জরায়ুকে সংকুচিত করতে পারে। লাল মাংসে আয়রনের পরিমাণ বেশি হতে পারে তবে এতে প্রোস্টাগø্যান্ডিনও বেশি থাকে। তাই পিরিয়ডের সময় এই খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

পিরিয়ডের সময় খাবার নিয়ে যেমন সচেতন থাকতে হবে তেমনি হালকা ব্যায়াম করলেও উপকার প্ওায়া যাবে। কার্ডিও ও যোগব্যায়াম করলে পিরিয়ডের ব্যথা কমে। এ ছাড়া পেট বা পিঠে ম্যাসাজ করলেও পিরিয়ডের ব্যথা কমতে পারে।

সূত্র : হেলথলাইন

Link copied!