বর্তমানে অনেকেই থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন। গলার সামনের দিকে থাকা ছোট্ট একটি গ্রন্থি থাইরয়েড, যা আমাদের শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোন শরীরের প্রতিটি কোষ, টিস্যু ও অঙ্গের কাজের সঙ্গে যুক্ত।
তাই এটি ঠিকভাবে কাজ না করলে ক্লান্তি, ওজন বেড়ে বা কমে যাওয়া, এমনকি মানসিক পরিবর্তন পর্যন্ত হতে পারে।
অনেকে মনে করেন, থাইরয়েড থাকলে খাওয়াদাওয়ায় অনেক বাধা আছে। বিশেষ করে বাঁধাকপি ও ফুলকপি খাওয়া একেবারেই বারণ। কিন্তু সত্যিই কি এই সবজি থাইরয়েডের ক্ষতি করে? এ বিষয়ে ভারতীয় পুষ্টিবিদ রাখি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
বাঁধাকপি-ফুলকপিতে কী আছে
রাখির মতে, বাঁধাকপি ও ফুলকপির মতো ক্রুসিফেরাস সবজিতে থাকে গোয়িট্রোজেনিক নামের এক ধরনের যৌগ। এই উপাদান অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে গেলে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, অল্প পরিমাণে এই সবজি খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। পাশাপাশি, সেদ্ধ করলে এর ক্ষতিকর উপাদান অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ, মাঝেমধ্যে খেলে কোনো সমস্যা নেই, যদি পরিমাণে বেশি না হয়।
সোয়াবিন ও বিনস নিয়ে সতর্কতা
রাখি আরও জানান, থাইরয়েডের রোগীদের জন্য সোয়াবিন বা কিছু বিনস খাওয়ায় সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত। কারণ এগুলিতে গোয়িট্রোজেনিক উপাদান অনেক বেশি থাকে, যা থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে সোয়া চাঙ্কস খাওয়া যেতে পারে, কারণ এটি প্রক্রিয়াজাত হওয়ার সময় ক্ষতিকর উপাদান অনেকটাই কমে যায়।
থাইরয়েডে কীভাবে খাবেন
পুষ্টিবিদের মতে, থাইরয়েডের রোগীদের জন্য আলাদা কোনো কঠোর খাদ্যনিয়ম নেই। বরং হরমোনের ধরন বুঝে সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখাই সবচেয়ে জরুরি।
হাইপোথাইরয়েডিজমে (হরমোন কম হলে) : কম কার্বোহাইড্রেট ও নিয়ন্ত্রিত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
হাইপারথাইরয়েডিজমে (হরমোন বেশি হলে) : ব্যালেন্সড ডায়েট ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলেই ভালো থাকা যায়।
বাঁধাকপি ও ফুলকপি থাইরয়েডের জন্য একেবারে খাওয়া মানা নয়। পরিমাণ বুঝে, সেদ্ধ করে খেলে এগুলো খাওয়া নিরাপদ। বরং পুষ্টিকর সবজি হিসেবে এগুলো শরীরের জন্য উপকারী।
তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র : এই সময় অনলাইন






































