দীর্ঘ সময় ধরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বা অফিসে থাকলে চোখের গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বাতাসের আর্দ্রতা শুষে নেয়। তাই বদ্ধ ঘরে দীর্ঘ সময় এসি চললে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ একেবারে কমে যেতে পারে। আর বাতাসের আর্দ্রতা কমে গেলে তার প্রভাব পড়ে চোখের উপর। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ইভাপোরেটিভ ড্রাই আইজ’। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখের পাতায় থাকে এমন সব গ্রন্থি যেগুলি থেকে জলীয় পদার্থ ক্ষরিত হয়। ক্ষরিত হয় স্নেহপদার্থও। দীর্ঘ সময় ধরে এসিতে থাকলে চোখের পাতায় থাকা এই লিপিড উৎপাদক গ্রন্থিগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রভাব পড়তে পারে অশ্রুগ্রন্থির উপরেও। সব মিলিয়ে চুলকাতে থাকে চোখ। তার উপর দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে দৃষ্টি রাখলে সমস্যা তৈরি হয়। চলুন জেনে নিই কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন যে ‘ড্রাই আইজ’এর সমস্যা হচ্ছে—
- মাঝেমাঝে চোখের সামনের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া ‘ড্রাই আইজ’-এর একটি লক্ষণ।
- কোনও কারণ ছাড়াই চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ার সমস্যাও ড্রাই আইজের লক্ষণ হতে পারে। চোখ থেকে পানি পড়ার অর্থ হল ‘টিয়ার ফিল্ম’ চোখকে আর্দ্র রাখতে পারছে না। তাই শুষ্ক চোখকে আর্দ্র রাখতে পানি উৎপাদন করে।
- চোখ ভাল রাখতেও সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া প্রয়োজন।
- চোখের ক্লান্তিও কিন্তু এর একটি লক্ষণ। চোখে যখন পানি কমে যায়, তখন বার বার পলক ফেলে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। ফলে চোখে একটা ক্লান্তি আসে।
‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা রোধ করতে যা করবেন
- চোখের পাতায় কোনও ধুলোবালি জমতে দেবেন না। ধুলো থেকেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে। চোখ সব সময়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। বাইরে থেকে ফিরে ভালো করে চোখ ধুয়ে নিতে হবে। চোখে-মুখে পানি দেওয়ার আগে ভালো করে ত্বক পরিষ্কার করে নিন।
- কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। যারা সারা দিন কনট্যাক্ট লেন্স পরে থাকেন তাদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, দিনে ৫-৬ ঘণ্টার বেশি লেন্স পরে না থাকাই ভালো।
- দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে না থাকাই ভালো। অফিসে থাকলেও মাঝেমাঝে বিরতি নিন। এতে ভালো থাকবে চোখের স্বাস্থ্য।
- সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া প্রয়োজন। পানি খেলে শরীর আর্দ্র থাকে। এ ছাড়াও তরমুজ, শসা, স্ট্রবেরির মতো পানিযুক্ত ফল বেশি করে খান। এতে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :