‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত নায়িকা শিমলা। প্রয়াত শহীদুল ইসলাম খোকনের পরিচালনায় ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় ‘ম্যাডাম ফুলি’। সে সময় কেবল বক্স অফিস জয় করেনি ‘ম্যাডাম ফুলি’, জন্ম দিয়েছিল এক উজ্জ্বল তারকা শিমলার।
প্রথম সিনেমায় বাজিমাত, সঙ্গে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার; যেন ক্যারিয়ারের সূচনাতেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন সাফল্যের চূড়া। কিন্তু তার পরের গল্পটা যেন আরেক সিনেমার চিত্রনাট্য। শিমলা ছিলেন ব্যস্ত, রূপালি পর্দা দাপিয়ে ফিরতেন চরিত্র থেকে চরিত্রে। অথচ সময়ের স্রোতে তিনি ধীরে ধীরে সরে গেলেন আড়ালে, রঙিন আলোর দুনিয়া থেকে যেন ফিকে হয়ে গেলেন একসময়। মাঝে মাঝে ভেসে উঠেছে তার নাম, কিন্তু ছিল না সেরকম কোনো আলোড়ন।
২০১৫ সালে শিমলার জীবনে নামে আরও এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘নাইওর’ নামে নতুন সিনেমার কাজ শুরুর খবরে ফিরেছিলেন শিরোনামে, কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন এক ট্র্যাজেডির কারণে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ বিমান ছিনতাই চেষ্টায় নিহত হন শিমলার সাবেক স্বামী পলাশ আহমেদ। সারা দেশে তখন এ নিয়ে হইচই হলে শিমলা সিনেমার নায়িকা থেকে বাস্তব জীবনের ট্র্যাজেডির মুখপাত্রে পরিণত হন।

এরপর কেটে যায় অনেকটা সময়। শিমলা হয়ে ওঠেন স্মৃতির নাম। কোথায় আছেন, কী করছেন তা নিয়ে চলত কানাঘুষা। ঢালিউডের রুপালি জগৎ তখন ব্যস্ত নতুন মুখের খোঁজে, পুরনো তারকারা যেন হারিয়ে যেতে বসেছিলেন।
কিন্তু সময়ের চাকা আবারও ঘুরল। সম্প্রতি এক জাঁকজমকপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে লাল গালিচায় পা রেখেই শিমলা জানিয়ে দিলেন তিনি ফিরেছেন।
চোখেমুখে সেই চেনা আত্মবিশ্বাস, ঠোঁটে ঘোষণা, “হ্যাঁ, আবার নিয়মিত কাজ করব। দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দিতে চাই।”যেন বলে দিলেন, এই ফেরা শুধু উপস্থিতির জন্য নয়, আবার আলো ছড়ানোর জন্য।
দর্শকমনে প্রশ্ন উঠেছে শিমলা কি ফিরবেন সেই পুরনো ‘ম্যাডাম ফুলি’ রূপেই? নাকি এই প্রত্যাবর্তন হবে নতুন কাহিনির, নতুন রূপের?
নিজেই স্পষ্ট করেছেন শিমলা, তিনি বলেন, “নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি। এখন কাজ করার জন্য প্রস্তুত। আবার চলচ্চিত্রে নিয়মিত হতে চাই। ভালো গল্প আর বাজেট পেলে কাজ করবো। এরই মধ্যে কয়েকটি কাজের কথা হয়েছে। ব্যাটে-বলে মিললে কাজগুলো করবো।”
সময়ের প্রেক্ষাপটও যেন তার এই ফেরার পক্ষে কথা বলছে। ঢালিউডে এখন অভিজ্ঞ ও পরিণত অভিনেত্রীদের সংকট স্পষ্ট। তাই শিমলার মতো এক সময়ের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তারকার কামব্যাক সিনেমাপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক। আর যখন এই প্রত্যাবর্তন ঘটছে তার নিজের কথায়, তখন মনে হতেই পারে ‘ম্যাডাম ফুলি’ ফিরেছেন ফুল ফর্মে, নতুন দিনের আলোয়।
এখন শুধু অপেক্ষা রুপালি পর্দায় সেই আলো ছড়িয়ে পড়ার। শিমলার এই নতুন যাত্রা কতটা জাঁকজমকপূর্ণ হয়, তা সময়ই বলে দেবে।