নারী উদ্যোক্তা, বন্ধুত্ব, স্টার্টআপের বাস্তবতা এবং করপোরেট প্রতারণার জটিলতা—এই সবকিছু মিলে তৈরি হয়েছে অ্যামাজন প্রাইমে সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ ‘ডু ইউ ওয়ানা পার্টনার’। গত ১২ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাওয়া এই সিরিজটিতে দুই বন্ধুর স্বপ্নপূরণের লড়াই আর আত্মপরিচয় গড়ার যাত্রা উঠে এসেছে হাস্যরসের মোড়কে, বাস্তবতার কাঁটাঝোপ পেরিয়ে।
শিখা (তামান্না ভাটিয়া) ও অনাহিতা (ডায়ানা পেন্টি)—দুই কর্মজীবী নারী। একদিকে শিখা তার বাবার স্বপ্নকে বাঁচাতে চায়, অন্যদিকে অনাহিতা লড়ছে করপোরেট বৈষম্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে দুজনই চাকরি হারিয়ে ফেলে, এবং শুরু করে ক্রাফট বিয়ারের স্টার্টআপ। তাদের পথচলায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় একসময়কার বিশ্বাসঘাতক বিক্রম ওয়ালিয়া (নীরজ কবি), করপোরেট রাজনীতি এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। প্রশ্ন ওঠে—বন্ধুত্ব টিকবে তো? ব্যবসা দাঁড়াবে তো?
সিরিজটির বড় শক্তি হলো এর নারীকেন্দ্রিক গল্প এবং বাস্তবধর্মী স্টার্টআপ চিত্রায়ন। ‘বুটস্ট্র্যাপ’, ‘ইউএসপি’, ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’—প্রতিটি পর্বের নামও রাখা হয়েছে স্টার্টআপ জার্নির টার্ম ব্যবহার করে, যা সিরিজটিকে দিয়েছে থিম্যাটিক একতা।
এখানে স্পষ্টভাবে দেখা যায়—নারীরা ব্যবসা করতে গেলে কেবল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জই নয়, বরং সামাজিক, মানসিক এবং লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যেরও শিকার হন। তবে পুরুষ চরিত্রগুলোকে শত্রু নয়, সহযোদ্ধা হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা সিরিজটির অন্যতম পজিটিভ বার্তা।
‘ডু ইউ ওয়ানা পার্টনার’ নিছক কমেডি নয়, আবার অতিরিক্ত গম্ভীরতাও নয়। হাসির ফাঁকে ফাঁকে উঠে এসেছে বাস্তব জীবনের কঠিন সংগ্রাম। অভিনয়, রসায়ন এবং ভাবনার দিক দিয়ে সিরিজটি সফল।
যারা নারী নেতৃত্ব, উদ্যোক্তা জীবন, কিংবা বন্ধুত্ব নিয়ে সিরিজ দেখতে ভালোবাসেন—তাদের জন্য এটি একটি উপভোগ্য বাছাই হতে পারে।