কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) র্যাগিংয়ের নামে এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম. আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলকে আহ্বায়ক এবং একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খানকে সদস্য সচিক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন প্রভোস্ট কাউন্সিল সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, খালেদা জিয়া হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম।
আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, “তদন্ত কমিটির চিঠি হাতে পেয়েছি। শনিবার কমিটির সকলে বসে বিষয়গুলো তদন্ত সাপেক্ষে সত্য উৎঘাটন ও সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের চেষ্টা করা হবে।”
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নবীন এক ছাত্রীকে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাড়ে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে ওই ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তাকে নির্যাতন চালিয়েছেন। একপর্যায়ে তারা ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল, ময়লা জিনিসপত্র জিহ্বা দিয়ে চাটানোসহ নানামুখী অমানুষিক নির্যাতন করেন। এমনকি এ কথা কাউকে বললে মেরে ফেলার এবং শিয়াল-কুকুর দিয়ে খাওয়ানোরও হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেত্রী। তাদের ধারণ করা ভিডিও ভাইরাল করারও হুমকি দেওয়া হয়।
এ দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নানাভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ সভাপতি ইমানুল সোহান ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান সুইট বলেন, “আবাসিক হলের অভ্যন্তরে প্রথম বর্ষের একজন ছাত্রীকে যেভাবে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘৃণ্য ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এ ঘটনার অভিযুক্ত মূল হোতা ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ সহযোগীদের উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহমেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। সেই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জোর দাবি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :