• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা

প্রথম দিনে প্রাণবন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা


শাহাদাত হোসেন তৌহিদ
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১, ০২:৫৬ পিএম
প্রথম দিনে প্রাণবন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

দীর্ঘ ১৭ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। স্কুল আঙিনা ফিরে এসেছে আপনরূপে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছিল খেলাধুলা, দৌড়াদৌড়ি, বই নিয়ে আড্ডা। সব মিলিয়ে স্কুল আঙিনায় ছিল অন্য রকম একটি উচ্ছ্বাস। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধির ওপর ছিল কঠোরতা। ছিল সবার মুখে মাস্ক। প্রবেশমুখে ছিল হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা সুরক্ষাসামগ্রী।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও বটমলী হোম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খোলা পরিবেশে পেয়ে তারা আনন্দ প্রকাশ করছে।

বটমলী উচ্চবিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, “দেড় বছর পর স্কুলে এসে খুব ভালো লাগছে। স্কুল একটা খোলামেলা জায়গা, এ কারণে খুব ভালো লাগছে। আমাদের শিক্ষকরাও পড়াচ্ছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দেশনা দিচ্ছেন। সামনে আমাদের পিএসসি পরীক্ষা। শিক্ষকরা আমাদের যেভাবে পড়াচ্ছেন, সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নেব।”

একই প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থী ইসরাত জাহান দীপ্তি বলে, “অনেক দিন ধরে আমরা চাচ্ছিলাম যে আমাদের স্কুলগুলো খোলা হোক। আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যে, আমাদের পরীক্ষা হবে। দীর্ঘ দেড় বছর পর স্কুল খোলার পর আমরা অনেক উৎসাহিত ছিলাম। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগছে।”

ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ছবিটি রাজধানীর তেজগাঁও বটমলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তোলা।

কেমন ছিল প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা, জানতে চাইলে ওই স্কুলের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক ইমাম হাসান বলেন, “দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আজ আমরা বেশ উচ্ছ্বসিত। সরাসরি ক্লাস নিতে পেরে আমাদের খুব ভালো লাগছে। শিক্ষার্থীরাও খুব উৎফুল্ল।”

তেজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপসী ধর বলেন, “আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত হয়েছে। স্কুলে আসতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত। আমাদেরও অনেক খুশি লাগছে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা আসুক। শুধু পড়াশোনা নয়, শিক্ষার্থীদের মানসিক একটা পরিবর্তনও জরুরি।”

অভিভাবকদের আগ্রহ নিয়ে তাপসী আরও বলেন, “আমি এমনও দেখেছি অনেক বাচ্চার সঙ্গে তাদের বাবা-মা দুজনই এসেছেন। এ থেকে বোঝা যায়, তাদের আগ্রহ অনেক বেশি। যতক্ষণ আমাদের ক্লাস চলেছে ততক্ষণ অভিভাবকরাও ছিলেন। এটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। সবকিছু মিলে আমরা খুব উপভোগ করছি।”

বটমলী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিলোত্তমা ক্যাথলিন রোজারিও বলেন, “করোনার কারণে এই প্রথম আমরা এমন একটি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। এর আগে এত দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকেনি। আজকে প্রকৃতপক্ষে আমাদের স্কুলের প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়েছে। আজকে মেয়েদের আনাগোনা, মেয়েরা হাঁটছে, পায়চারি করছে, কথা বলছে, সরাসরি যে সংযোগ—সবকিছু আমার কাছে প্রাণবন্ত মনে হচ্ছে। আমরা অনেক দিন শিক্ষার্থীদের অভাববোধ করছিলাম। স্কুলের যে নীরবতা, সেটা আমাদের একরকম কষ্ট দিত।”

প্রাণবন্ত শিক্ষার্থীরা

তেজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিস্টার মেরী দীপ্তি বলেন, “আজকে স্কুলে আসার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্য রকম স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ করা গেছে। দীর্ঘ দেড় বছর পর স্কুলে আসাটা ওদের কাছে বড় রকমের একটা আকর্ষণ। আমি প্রতিটা শ্রেণিকক্ষ ঘুরে ঘুরে দেখেছি, প্রথম দিন সবগুলো ক্লাসের শিক্ষার্থীকে আনতে চেষ্টা করেছি। সেদিক থেকেও তাদের মথ্যে একটা অন্য ধরনের স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে।”

 

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!