বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে নবান্ন উৎসব উদ্যাপন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছরের মতো এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা, পিঠা খাওয়া, নাচ-গান-আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘নবান্ন উৎসব-২০২৩’।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কৃষি অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম। অনুষদ ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালিও বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। এদিন পিঠা উৎসব, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কারের আয়োজন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, "বাঙালির ইতিহাস ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য আমাদের কৃষি অনুষদ কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এই নবান্ন উৎসব। আমাদের দায়িত্ব হলো, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। যদি আমরা তাতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা আমাদের সন্তানসহ পরবর্তী প্রজন্মকে বঞ্চিত করব আমাদের গ্রামবাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে।"
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমান প্রামাণিক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষি অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মো. আব্দুল আলিম, বিভাগের শিক্ষকরাসহ প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।
এবারের নবান্ন উৎসবে নিজেদের হাতের তৈরি ১২টি পিঠার স্টল নিয়ে বসেছে অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেখানে দুধপুলি, চন্দ্র পুলি, নারকেল পুলি, খোলা চিতই, তেল পিঠা, নকশী পিঠা, মালাই বিহার, সুজির বড়া, জামাই পিঠা, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, ডাবের পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, শামুক পিঠা, রুপালি পিঠা, বুটের বরফি, মোহন ভোগ, ডিম সুন্দরী, মাছের পিঠা, গাজরের হালুয়া, ডিমপুরি, গোলাপ, আরশি নগর, ঝাল-মিষ্টি, হৃদয় হরণ পিঠা, সূর্যমুখী, পাকোয়ান পিঠা, শামুক পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসে ভরা সবজি পিঠা, রস মলাই খিরপুলিসহ প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা শোভা পাচ্ছে। বাহারি নামের এসব পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা।
অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "আমরা কৃষির ছাত্র। গ্রামবাংলা নিয়েই আমাদের পড়াশোনা। নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে আমরা সবাইকে জানান দিতে চাই যে আমাদের গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আমাদের এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন। এখানে আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি প্রায় দেড় শতাধিক পিঠা নিয়ে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে।"