• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
ফিরছে শ্রেণিকক্ষে

তাপপ্রবাহের বিপদে সাড়ে তিন কোটি শিশু


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম
তাপপ্রবাহের বিপদে সাড়ে তিন কোটি শিশু
তীব্র তাপপ্রবাহে পানিতে নেমে স্বস্তি। ছবি: সংগৃহীত

দেশব্যাপী টানা মারাত্মক তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় দেশের ৩ কোটি ৩০ লাখ শিশু শ্রেণিকক্ষের বাইরে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় ২০ এপ্রিল থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে ঝুঁকির  মুখে পড়ে শিশুদের পড়াশোনা।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ায় পড়ালেখায় মনোযোগ হারায় দেশের লাখ লাখ শিশু। বিশেষত, সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় গ্রামাঞ্চলের অভিভাবদের। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্রদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা। তাপজনিত কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবার জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজছে।

পর্যবেক্ষণ বলছে, তাপপ্রবাহের তীব্রতায় শহরের চেয়ে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই গ্রাম বা পল্লী অঞ্চল। আর প্রান্তিকের বিপুল সংখ্যক শিশুদের পড়ালেখায় গরমের তীব্রতা মারাত্মভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে করোনাকালের মতোই পড়ালেখায় ভিন্নমাত্রা দেখা দিচ্ছে। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিশুদের ক্লাসমুখী করার উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে আবারও ক্লাসে ফেরানো হচ্ছে শিশুদের।

সেভ দ্য চিলড্রেনস বাংলাদেশ-এর পরিচালক সুমন সেনগুপ্ত বিবিসিকে বলেছেন, “বাংলাদেশের শিশুরা বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্রদের মধ্যে অন্যতম। তাপজনিত কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হযে যাওয়ায় আমাদের সকলের জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজানো উচিত।”

এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, তীব্র তাপপ্রবাহ অন্তত আরও এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আসছে মে মাসের প্রথম সপ্তায় বৃষ্টি হওয়ার পর তাপপ্রবাহ কমে যেতে পারে।

তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে পানিতে নেমেছে শিশুরা। ছবি: সংগৃহীত

ইউনিসেফ ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, পূর্ব এশিয়াসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তত ২৪ কোটি ৩০ লাখ শিশু তাপজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ তাপমাত্রা বিশেষ করে নবজাতক ও শিশুদের জন্য ‘গুরুতর ঝুঁকি’ সৃষ্টি করে। কেননা, শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তাদের শরীরের তাপমাত্রা কম নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেছেন, “এখনই জরুরিভাবে উষ্ণতা কমানোর জন্য কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে দরিদ্র শিশুদের জন্য ভাবতে হবে।” একইসঙ্গে মন্ত্রী তাপজনিত অসুস্থতার কারণে দেশের সব হাসপাতাল ও ক্লিনিককে রোগীর চাপ বেশি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) চলতি মাসের জন্য চতুর্থ দফার তাপ সতর্কতা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। এর আগে ৩, ১৯ ও ২২ এপ্রিল তিনদিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছিল।

বাংলাদেশসহ এশিয়ার অন্যসব দেশ গত কয়েকবছর ধরে চরম আবহাওয়ার ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। নতুন সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ আর প্রচণ্ড খরা থেকে বন্যা, ঝড়ঝঞ্ঝায় যেমন রেকর্ড হচ্ছে তেমনি উষ্ণততম বছর হিসেবেও দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনতি এসব ঘটনায় জীবনযাপন, পরিবেশ, সমাজ, অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে।

Link copied!