• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের ২১ নেতার পদত্যাগ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৩, ০৫:২৩ পিএম
ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের ২১ নেতার পদত্যাগ

গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন ও লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ তুলে একযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র অধিকার পরিষদের ২১ নেতা পদত্যাগ করেছেন।

রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি আসিফ মাহমুদ।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গড়ে উঠা একটি ছাত্র সংগঠন। কোনো প্রকার দলীয় লেজুড়বৃত্তি না করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকাই ছিল যার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনা ও অনুচ্ছেদ ৮ (লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য) এর ১নং ধারায় দলীয় দাসত্ব ও লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির বাইরে স্বাধীন ধারায় ছাত্র রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি ও ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করার কথা বলা হয়েছে। গত ১০ জুলাই ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনা ও অনুচ্ছেদ ৮ -এর ১নং ধারা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক গণঅধিকার পরিষদের লেজুড়বৃত্তি করার অভিযোগ উত্থাপন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এছাড়াও লিখিত অভিযোগ জানান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করায়, গঠনতান্ত্রিকভাবে তাদের পদ শূন্য হলেও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব। অভিযোগ পরবর্তী গত দীর্ঘ দুই সপ্তাহেও কেন্দ্রীয় পরিষদ উক্ত বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্র ও ছাত্র সমাজের প্রতি আদর্শের বিচ্যুতি ঘটেছে বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায় লেজুড়বৃত্তিহীন ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা একযোগে পদত্যাগ করছি।”

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, “আমরা ছাত্র অধিকার পরিষদ যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসেছিলাম। শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করা, তাদের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকা, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণের পক্ষে কথা বলাসহ ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারছি না। যে কারণে আমাদের মনে হয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দুই নেতা তাদের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করেনি এবং লেজুড়বৃত্তিক কার্যক্রম বন্ধ করতে পারেনি। সে প্রেক্ষিতে পদত্যাগ করাকেই আমরা সমাধান মনে করছি। তবে আমরা ব্যানার ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলব।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে সংগঠনটির ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান, আব্দুল কাদেরসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

পদত্যাগ করা ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের ২১ নেতারা হলেন—

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আসিফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুম, বিশ্ববিদ্যালয়টির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা সমন্বয়ক, দপ্তর সেলের সভাপতি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সহ-সম্পাদক দপ্তর সেলের মারজিয়া হোসেন জামিলা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা সমন্বয়ক, প্রচার ও প্রকাশনা সেলের সাধারণ সম্পাদক হাসিব আল ইসলাম, সহ-সমন্বয়ক, প্রচার ও প্রকাশনা সেলের সুমনা শারমিন, প্রচার ও প্রকাশনা সেলের সহ-সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম, অর্থ সেল সমন্বয়ক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ওয়াহিদ।

এছাড়াও রয়েছেন অর্থ সেলের সহ-সমন্বয়ক নুসাইবা তাসনিম সাবা, শিক্ষা ও পাঠচক্র সেলের সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম, শিক্ষা ও পাঠচক্র সেলের সহ-সমন্বয়ক ও স্যার এ. এফ. রহমান হল শাখার সহ-সমন্বয়ক আমিরুল ইসলাম মাহদী, তথ্য ও গবেষণা সেলের সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা সেলের সহ-সমন্বয়ক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন হামিম, তথ্য ও গবেষণা সেলের সহ-সমন্বয়ক সুলতানা শিক্ষা, স্যার এ. এফ. রহমান হল শাখা সমন্বয়ক, কর্মসূচি বাস্তবায়ন সেলের সভাপতি আব্দুল হান্নান মাসউদ, কর্মসূচি বাস্তবায়ন সেলের সহ-সমন্বয়ক মো. সালমান, স্যার এ. এফ. রহমান হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সাহিত্য সেলের সমন্বয়ক মো. রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ), সাহিত্য সেলের সহ-সমন্বয়ক আয়েশা রেজোয়ানা ও একই সেলের সহ-সমন্বয়ক রিপন কৃষ্ণ চৌধুরী।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ছাত্র অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঢাবি শাখার অন্তঃকোন্দলের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিলে তাদের কেন্দ্রীয় পদ শূন্য হয়েছে মর্মে জানতে চায় ঢাবি কমিটির নেতারা। পরবর্তীতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করতে চাইলেও কেন্দ্রীয় কমিটির অবহেলা ও সিদ্ধান্ত জানাতে সময়ক্ষেপণ করায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা।

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!