• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বোনের প্রেমিককে হত্যা, ভাইসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড


কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৪, ০৩:৩৭ পিএম
বোনের প্রেমিককে হত্যা, ভাইসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড
রায়ের পর আসামিদের নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি : প্রতিনিধি

কুমিল্লার হোমনায় মো. ফয়সল (২২) নামের এক যুবককে হত্যার দায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হোমনা উপজেলার রাজনগর গ্রামের মো. ফুল মিয়ার ছেলে মো. শামীম মিয়া (২৪) এবং একই উপজেলার সাফলেজি গ্রামের মো. বেদন মিয়ার ছেলে মো. দুলাল মিয়া (২০)।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত ফয়সালের সঙ্গে একই উপজেলার ফুল মিয়ার মেয়ে মেহেদী আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। যা মেনে নিতে পারছিলেন না মেহেদী আক্তারের ভাই শামীম। পরে ফয়সালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শামীম। এরপর ২০২০ সালের ৫ জুন ফয়সাল তার মামা নজরুল মিয়ার ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় শামীম ফোন করে ফয়সালকে আমিরুল ইসলাম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।

ফয়সাল কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই স্থানে যান। একপর্যায়ে তাকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং পরে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে ফয়সালের মরদেহ ওই বিদ্যালয়ের মাঠে পুঁতে রাখেন শামীম ও দুলাল।

ওই দিন রাতে ফয়সাল বাসায় না ফেরায় দুশ্চিন্তায় পড়েন স্বজনরা। পরদিন নিহত ফয়সালের বাবা মকবুল হোসেন বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফয়সালের মোবাইল ফোনের কললিস্ট চেক করে পুলিশ। এ সময় শামীমের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন শামীম।

পরে শামীমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফয়সালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শামীমের এ কাজে দুলাল সহযোগিতা করেন বলে জানালে পুলিশ দুলালকেও আটক করে।

এ ঘটনায় নিহত ফয়সালের বড় বোন সালমা আক্তার বাদী হয়ে শামীমকে প্রধান আসামি করে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে হোমনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর আটক শামীম ও দুলালকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে উভয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় উভয় আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এদিকে এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শেখ মাসুদ ইকবাল মজুমদার। তিনি বলেন, “আশা করছি, উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন।”

অপরদিকে আসামিপক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী বিমল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, এ রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট। রায়ের কপি হাতে পেলে দ্রুত উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

Link copied!