• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ


গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৪, ১০:১৭ এএম
মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ
পুলিশ শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি : সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে বেতন বাড়ানো ও নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়ে বিভিন্ন কারখানা অফিসে কর্মরত হাজার হাজার মানুষ। ঘণ্টা দুয়েক পর পুলিশ শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিকরা এখনো কারখানার সামনে অবস্থান করছেন।

এদিকে এসময় পুলিশকে লাঠিপেটা করতে ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পাল্টা শ্রমিকরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করে এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। এতে ঢাকা মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

শ্রমিকরা দাবি করেন, পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন শ্রমিকের পাশাপাশি পথচারীরা আহত হয়েছে। তবে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন, লাঠিপেটার বিষয়ে কিছু জানা নেই।

এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকেরা অভিযোগ করে বলেন, আশপাশের সব কারখানায় বেতন বাড়িয়েছে। এখানকার বেতন আগের মতোই রয়ে গেছে। বেতন কম দেওয়া হয়, তাও সময় মতো দেওয়া হয় না। প্রতি মাসের ১২ তারিখেরও আগেও বেতন দেওয়া হয় না। বিষয়টি সমাধানের জন্য এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার সংশ্লিষ্টদের কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য শ্রমিকেরা গেলেও তারা গুরুত্ব দেয়নি।

এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার শ্রমিক সোহাগ বেপারি বলেন, “আমার ভাই রুবেল বেপারি কাজ করে পাশের একটি গার্মেন্টসে তার বেতন আমার দ্বিগুণ। অথচ সমান পরিশ্রম করি, আমাদের বেতন অর্ধেকের কম। এ জন্য অনেক শ্রমিক স্পিনিং মিলস ছেড়ে গার্মেন্টসে চাকরি নিতে চেষ্টা করছে। আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বেতন বাড়ানোর কোনো পরিবেশ দেখছি না। তাই রাস্তায় এসেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেডের মাধ্যমে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের অনেক শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করেছে পুলিশ।”

ফাতেমা নামের এক শ্রমিক বলেন, “ন্যায্য দাবি আদায় করতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে। যে বেতন পাই দোকান বাকি আর ঘরভাড়া দিয়ে শূন্য হাতে বাসায় ফিরতে হয়। আমাদের বেতনের অপেক্ষায় থাকে বৃদ্ধ মা-বাবা ও সন্তান। এই সামান্য বেতনের চাকরিতে তাদের অল্প চাহিদাও পূরণ করতে পারছি না। আমাদের অযথাই লাঠিপেটা করছে। আমাদের সহকর্মী আরিফকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করেছে। এরপর বাধ্য হয়ে আমরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করি।”

শ্রমিক রুহুল মিয়া বলেন, “পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশের জনৈক নূরুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে পুলিশ আমাদের লাঠিপেটা করে। বাড়িতে প্রবেশ করে কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ফুটিয়ে আমাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পুলিশের লাঠিপেটায় অনেক শ্রমিক আহত হয়েছে।”

এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুলতান উদ্দিন বলেন, “বেতন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবুও শ্রমিকেরা মানছে না। তবুও আমরা চেষ্টা করছি বুঝিয়ে তাদের অপেক্ষা করাতে। কিন্তু বোঝানো যাচ্ছে না। এতগুলো শ্রমিক রাস্তায় নামলে আমরা কি করতে পারি।”

মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ বলেন, “সকাল ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এএ ইয়াং মিলস্ লিমিটেড নামক কারখানার শ্রমিকরা। তাতে করে সড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে অসংখ্য অফিসগামী মানুষ। পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। লাঠিপেটার বিষয়টি আমার জানা নেই।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!