কক্সবাজার উপকূলের কাছাকাছি সাগরে ভেসে এসেছে জাল প্যাঁচানো একটি মৃত তিমি। তিমিটির মাথায় রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। সমুদ্রবিজ্ঞানী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অন্তত সাত দিন আগে গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার কিংবা ট্রলিং জাহাজের পাখার (প্রপেলার) আঘাতে ও জালে আটকে পড়ে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কলাতলী সায়মন পয়েন্টের বালুচরে তিমিটি পুঁতে ফেলা হয়।
এর আগে, (১৮ এপ্রিল) মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতে মারা যাওয়া তিমিটি ভাসতে দেখেন স্থানীয় জেলেরা।
সৈকত রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত জেলা প্রশাসনের একজন বিচকর্মী জানান, ভোর চারটার দিকে বাতাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ ভেসে এলে তাদের সন্দেহ হয়। এরপর খোঁজ নিয়ে দেখেন, হিমছড়ি সৈকতে আগের দিন ভাসতে থাকা তিমিটি কলাতলী সৈকতে চলে এসেছে। পরে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বন ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা এবং পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিমিটি বালুচরে দ্রুত পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করেন। এর আগে, পরীক্ষার জন্য তিমির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা।
ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, গভীর সমুদ্রে বিচরণের সময় সম্ভবত তিমিটি মাছ ধরার ট্রলার কিংবা ট্রলিং জাহাজের ধাক্কা খেয়েছিল। মরা তিমির মাথায় আঘাতের একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজের ধাক্কা খেয়ে তিমিটি ট্রলারের জালে আটকে পড়েছিল। এ কারণে তিমিটির মৃত্যু হয়। তিমির নমুনা পরীক্ষা ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, মরা তিমিটি মঙ্গলবার রাতে জোয়ারে ভেসে কলাতলী সৈকতের দিকে চলে আসে। পরে তিমিটি উদ্ধার করে বালুচরে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এর ফলে আর দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে না। তিমির মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে নমুনা সংগ্রহ করে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছেন।
এর আগে, ২০২১ সালের এপ্রিলে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পশ্চিমে দরিয়ানগর ও হিমছড়ি সৈকতে বিশাল আকৃতির দুটি মৃত তিমি ভেসে এসেছিল।
আপনার মতামত লিখুন :