বিএনপি জ্বালাও পোড়াও করে দেশের ক্ষতি করছে : রিমি

বিএনপি জ্বালাও পোড়াওয়ের মাধ্যমে দেশের ক্ষতি করছে। একইসঙ্গে তারা নিজেরাই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের সঙ্গে সাধারণ মানুষ থাকছে না, খেটে খাওয়া মানুষ থাকছে না। মানুষ তাদের কর্মকাণ্ডে কষ্ট পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গতাজকন্যা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমি।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “যারা জনগণের সঙ্গে থাকে না, জনগণ থেকে দূরে থাকে, তাদেরকে জনগণ ভালো দৃষ্টিতে দেখে না। মানুষ সব শেষে শান্তি চায়। এ শান্তিটার জন্য জনগণ নির্বাচনী কার্যক্রমে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিচ্ছে। তারা ভোট দিতে চায়।”

তাজউদ্দীন আহমেদের এ কন্যা আরও বলেন, “কাপাসিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বড় যে কাজটা করেছি সেটা ২০১৭ সাল থেকে গবেষণা করে একটি সার্ভে করা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ তথ্য আপডেট করা হচ্ছে। আজকে এখন পর্যন্ত এই উপজেলায় ২৯ হাজারের বেশি নারী গর্ভবতী আছে। এটি সার্ভে করার জন্যই আমি জানতে পেরেছি। এর ফলাফলে কাপাসিয়া দেশের একমাত্র উপজেলা যেখানে মাতৃমৃত্যু হার শুন্য। জাতিসংঘের ইউএনএফপিএ এ কাজটিকে বেস্ট প্র্যাকটিস হিসাবে ঘোষণা করেছে।” ২০২১ সালে তাদের ওয়েবসাইটে মাতৃমৃত্য শুন্য মডেল কাপাসিয়া হিসাবে ঘোষণা করেছে। তৃতীয় বিশ্বের আরও অনেক দেশ এটি গ্রহণ করতে পারে। মুজিব বর্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাপাসিয়া ভ্রমণ করে দেশের আরও ১০০টি উপজেলায় মডেল হিসাবে গ্রহণ করতে চেয়েছেন। কিছু কিছু উপজেলায় সেটি শুরু করেছে। উপজেলার সকল নাগরিক সরাসরি ফোনে কল এবং এসএমএস করে যোগাযোগ করতে পারে।”

বঙ্গতাজ কন্যা বলেন, “কাপাসিয়ায় আগে দেখতাম বিদেশে গিয়ে মানুষ কর্মদক্ষ না হলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন পেত, কর্মদক্ষ হলে সেখানে ৮০ থেকে ১ লাখ টাকা বেতন পাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রথম পর্যায়ের উদ্যোগে ২০১৬ সালে একটা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার করা হয়েছে। সরকারি কারিগরি স্কুল, কলেজ ও নার্সিং কলেজ করেছি। যেখান থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা দেশে বিদেশে কর্মসংস্থান করে নিতে পারছে। ”

নির্বাচনী জয়ী হলে কৃষি ভিত্তিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “আমি আমার উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো ও সামাজিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য কাজ করব। যেই দেশ মানুষকে খাবার দিতে পারে সেই দেশ পৃথিবীকে ডোমিনেট করতে পারে। বাংলাদেশ একদিন সেটি করবে। আমাদের এ অঞ্চল কৃষিভিত্তিক অঞ্চল। তাই এ অঞ্চলে দ্রুত কৃষি ভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। যাতে করে মানুষ তাদের কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালেসিয়ায়সহ বিভিন্ন দেশে পাঠাতে পারে। আমরা সার্ভে করে দেখেছি আমার এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের প্রধান কর্তা উপার্জনক্ষম। এ পরিবারটি যাতে তাদের বিকল্প উপার্জনের ব্যবস্থা করতে পারে সেটি নিয়ে আমরা কাজ করব।”

বঙ্গতাজ কন্যা বলেন, “আপনারা জনগণের সেবা করার জন্য আমাকে টানা ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আমি আপনাদের দীর্ঘদিন যাবৎ সেবা করে আসছি। কাপাসিয়ার জনগণের সেবা করার জন্য এবারও নৌকায় ভোট দিবেন, আপনাদের পাশে আমাকে রাখবেন। এতোদিন আপনাদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার চেষ্টা করেছি। আগামীতে এই উপজেলার জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবো ইনশাআল্লাহ। আপনারা দলমত নির্বিশেষে আমাকে ভোট দিবেন। আমি বঙ্গতাজ তাজউদ্দীনের মেয়ে। আমরা মাঠের মানুষ, মানুষের জন্য কাজ করি সেবা করি, আপনাদের সঙ্গে ছিলাম এখন ও আছি। যতদিন বেঁচে থাকবো আপনাদের সঙ্গেই থাকতে চাই। রাষ্ট্রের উন্নয়নের স্বার্থে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী বানাবেন আপনারা।”

প্রচারণা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাজহারুল ইসলাম সেলিম, আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজগর রসিদ খাঁন, উপজেলা আওয়ামী লীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা সরকার, নির্বাচনী মিডিয়া সমন্বয় উপকমিটির কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন আকন্দ, উপজেলা প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক ইমানউল্লাহ শেখ (ইমু) উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিদ দর্জি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, ৩নং ওয়াডের সভাপতি মো. মোফাজ্জল হোসেন খান, উত্তম কুমার দাস প্রমুখ।

একই দিন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কার শামসুদ্দিন খাঁন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলম আহমেদ ঈগল মার্কা নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচার কাজ চালিয়েছেন।