ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেশ থেকে বিতারণ করে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতেই পরিকল্পিতভাবেই দুর্গাপূজা চলাকালে সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
দেশব্যাপী হামলার প্রেক্ষাপটে সম্প্রীতি বজায় রাখতে সাম্প্রদায়িক মহলের চক্রান্ত প্রতিরোধে সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণার যথাযথ বাস্তবায়ন দাবি করেন রানা দাশগুপ্ত।
দুর্গাপূজার শেষ তিন দিনে দেশব্যাপী কমপক্ষে ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্যে জানানো হয়। এসব হামলায় ৪ জন নিহত, কমপক্ষে ৭০ জন আহত, ৩০টি বাড়ি এবং ৫০টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, “এসব সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে আজ আর উড়িয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিশ্বাস করি এর সবটাই পরিকল্পিত, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে একদিকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিসরে বিনষ্ট করা। অন্যদিকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় অগ্রসরমান উন্নতিকে ব্যাহত করা। তদুপরি বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেশ থেকে বিতারণ করে গোটা দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করা।”
রানা দাশগুপ্তের অভিযোগ, “আজ পর্যন্ত দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার পেলাম না। রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাসিরনগর বা যেকোনো হামলা, কারো শাস্তি হয়নি। শাস্তি না পাওয়ায় সরকারের ভেতরে ও বাইরে থাকা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী শক্তি পাচ্ছে। বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর ও তাদের আশ্বাসে আজ আর আস্থা রাখতে পারছে না।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে হামলার প্রতিবাদে ২৩ অক্টোবর সারাদেশে ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত গণঅনশন ও গণঅবস্থান এবং হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঢাকায় এ কর্মসূচি শাহবাগ এবং চট্টগ্রামে আন্দরকিল্লা চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিন বোধী ভিক্ষু, ঐক্য পরিষদ নেতা রণজিৎ কুমার দে, অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, মহিলা ঐক্য পরিষদ নেত্রী অধ্যাপক বিজয়লক্ষ্মী দেবী, ন্যাপ নেতা মিটুল দাশগুপ্ত, অ্যাডভোকেট শঙ্কর প্রসাদ দে ও রুবেল পাল।