কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা মুহিবুল্লাহর বুক বুলেটে ঝাঁজরা করে দেয়। একে একে পাঁচ রাউন্ড গুলি করলে তিন রাউন্ড গুলি সরাসরি তার বুকে লাগে। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, উখিয়া কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্পে এশার নামাজ শেষ করে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) অফিসে অবস্থানকালে ২০-২৫ জনের একটি বন্দুকধারী দল আমার ভাইয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ওই অফিসে কর্মরত অন্যদের মারধর করে ছেড়ে দিলেও ভাইয়ের বুকে গুলি চালিয়ে বুলেটে তার বুক ঝাঁজরা করে দেয় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা।
হাবিব উল্লাহ বলেন, বন্দুকধারীদের এ দলে মাস্টার আব্দুর রহিম, মুর্শিদ, লালুসহ ২০ থেকে ২৫ জন ছিল। তাদের তিনি আল ইয়াকিনের সদস্য বলে দাবি করেন।
মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহ আরও বলেন, “রোহিঙ্গাদের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমার ভাই এগিয়ে আসতেন। তাদের অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছিলেন। শুধু এখানে নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও আমার ভাইয়ের পরিচিতি ছিল। হয়তো সেই যাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে এ হামলা এবং তাকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘাতকদের শাস্তির দাবি জানাই।”
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-ওয়েস্ট (ডি ব্লকে) নিজ অফিসে অবস্থান করছিলেন মুহিবুল্লাহ। এ সময় বন্দুকধারীরা গুলি করে হত্যা করে তাকে।
মুহিবুল্লার উত্থান হয় ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা আগমনের বর্ষপূর্তিতে। ওই দিন তিনি লাখো রোহিঙ্গার সমাবেশ ঘটিয়ে আলোচনার তুঙ্গে এনেছিলেন নিজেকে। সেদিন তার নেতৃত্বে ছিল ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গার মহাসমাবেশ।
এরপর তিনি উখিয়া-টেকনাফের ৩২ রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে ছিলেন। রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন।