• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বড় হার বাংলাদেশের, হোয়াইটওয়াশ এড়ালো আয়ারল্যান্ড


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম
বড় হার বাংলাদেশের, হোয়াইটওয়াশ এড়ালো আয়ারল্যান্ড
ফাইল ছবি

ইংল্যান্ডের পর আয়ারল্যান্ডকেও হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তবে আইরিশদের বিপক্ষে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত শামিম হোসেনের লড়াকু ফিফটিতে ১২৪ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ।

তবে অধিনায়ক পল স্টার্লিংয়ের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে সেই লক্ষ্য সহজেই টপকে গিয়েছে আয়ারল্যান্ড। আর এতে করে টানা দুই সিরিজে হোয়াটওয়াশ করার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বাংলাদেশের। শুক্রবার (৩১ মার্চ) সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাত উইকেটের ব্যবধানে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল।  

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসানের করা প্রথম দুই ওভার থেকে ১৫ রান তুলে নেয় দুই আইরিশ ওপেনার। তবে পরের ওভারেই রস অ্যাডায়ারকে ফিরিয়ে টাইগারদের ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ।

উইকেট হারালেও আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড। চতুর্থ ওভারে প্রথমবার বল হাতে নেওয়া হাসান মাহমুদকে ছক্কা হাঁকিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং। এক বলের ব্যবধানে আরও একটি চার। এই ওভার থেকে আইরিশদের স্কোরবোর্ডে যোগ হয়েছে আরও ১৪ রান।

১২৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম চার ওভারেই ৩৬ রান তোলে আইরিশরা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে প্রথমবার বল হাতে নিয়েই দলকে উইকেট শিকারের আনন্দে মাতান শরিফুল। দলীয় ৪১ রানে তার বলে লিটন দাসের ক্যাচ হয়ে ফেরেন লকরান টেকর।

তবে অন্যপ্রান্তে পল ঠিকই আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন। পাওয়ার প্লের মধ্যে ব্যাট হাতে ১৮ বলে ৩০ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। অন্যদিকে ছয় ওভার শেষে আইরিশদের দলীয় সংগ্রহ দুই উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান।

পাওয়ার প্লে শেষেও আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে গেছেন স্টার্লিং। ইনিংসের সপ্তম ওভার করা নাসুম আহমেদকে এক ওভারেই হাঁকান এক চার ও এক ছক্কা। স্টার্লিং ঝড়ে আট ওভারেই আইরিশদের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৬৬ রান।

ইনিংসের ১০ ওভারে ব্যক্তিগত ৩১তম ওভারে ফিফটি স্পর্শ করেন স্টার্লিং। তার ব্যাটে চড়েই আইরিশদের সহজ জয়ের মঞ্চ তৈরি হয়। ইনিংসের একাদশ ওভার করতে আসা শরিফুলকে নিয়ে তো রীতিমতো ছেলেখেলা করেছেন স্টার্লিং। ওই ওভারের প্রথম চার বলে মেরেছেন এক ছক্কা ও তিন চার।

ইনিংসের ১৩তম ওভারে স্টার্লিংকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন অভিষিক্ত স্পিনার রিশাদ। তবে ফেরার আগে ৪১ বলে ৭৭ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে হারানোর রাস্তা তৈরি করে গিয়েছেন তিনি।

দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়ানোর বাকি কাজ সেরেছেন টেক্টর ও ক্যাম্পার। তাদের নিরবিচ্ছিন জুটিতে ছয় ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয় আইরিশদের। তবে প্রথম ম্যাচের জয়ে সিরিজ জয়ের শিরোপা ঠিকই উঠেছে টাইগারদের হাতে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম বলেই চার হাঁকান লিটন কুমার দাস। প্রথম ওভারে নিজের মুখোমুখি হওয়ার প্রথম বলে চার রনি তালুকদারের ব্যাট থেকেও। প্রথম ওভার থেকে আসে ৯ রান।

তবে আগের দুই ম্যাচে তাণ্ডব চালানো লিটন এদিন ফেরেন শুরুতেই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের দূরের বল মারতে গিয়ে জর্জ ডকরেলের তালুবন্দি হন তিনি। এ ম্যাচে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে পাঁচ রান।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে নতুন করে শুরু করার চেষ্টা করেছিলেন রনি। তবে দলীয় ১৮ রানে শান্তও ফিরে গেলে চাপে পড়ে টাইগাররা। এরপর মাত্র ছয় রানের ব্যবধানে রনিও ফিরলে আরও বিপদে পড়ে টাইগাররা। রনির ব্যাট থেকে এসেছে ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংস।

তবে উইকেটে এসেই পাল্টা আক্রমণে যেন সেই চাপ উধাও করে দিতে চাইলেন হৃদয়। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে টানা দুই বলে হাঁকান চার ও ছক্কা। তবে পরের ওভারে সাকিবের বিদায়ে বিপদ ভাঙে সেই প্রতিরোধ।

পাওয়ার প্লের পরের ওভারে বিদায় নিয়েছেন হৃদয়ও। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে থেকে টেনে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সোজা ওপরে তুলেছিলেন হৃদয় । আর তাতেই বেজেছে তার বিদায় ঘণ্টা।

অভিষেক ম্যাচে প্রথম বলে ছক্কা হাকানো রিশাদ ফিরেছেন দলীয় ৬১ রানে। আট রানে তিন ফিরেছেন আরেক অভিষিক্ত আইরিশ স্পিনার  ম্যাথু হামফ্রিসের বলে বোল্ড হয়ে।

এক বলের ব্যবধানে তাসকিন আহমেদকেও খালি হাতে ফিরিয়ে দেন হামফ্রিস।  একপাশে অন্যরা যাওয়া আসার মিছিলে ব্যস্ত থাকলেও অন্যপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন শামিম।

তাসকিন ফেরার পর নাসুম আহমেদকে নিয়ে চাপ সামলে নতুন জুটি গড়েন শামিম। তাদের জুটিতে কিছুটা হলেও টাইগাদের স্কোরবোর্ডে প্রাণের সঞ্চার হয়।

দলীয় ৯৪ রানে নাসুম ফিরলে ভাঙে তাদের ৩৩ রানের জুটি। এরপর ১০ রানের ব্যবধানে শরিফুল ফিরলে নবম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে একপাশ আগলে রাখা শামিম তুলে নিয়েছেন দারুণ লড়াকু ফিফটি।

১৯তম ওভারে টানা দুই বলে ছক্কা ও চার হাকিয়ে ৪১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন শামিম। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটাই তার প্রথম ফিফটি।

তবে শেষ পর্যন্ত আর খেলতে পারেননি। ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শামিম ফিরলে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ১৯.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস। 

Link copied!