ম্যাচের বয়স দশ মিনিট হওয়ার আগেই গোলের দেখা পেলো ফ্রান্স। তবে গোল হজম করেই যেন হিংস্র বাঘ হয়ে উঠলো মরক্কো। একের পর এক আক্রমণে ফরাসি দূর্গ কাঁপিয়ে দিলো বেশ কয়েকবার।
প্রথমার্ধে গোলের দেখা না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধার বজায় রেখেছিল আফ্রিকান দেশটি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কাউন্টার অ্যাটাকে আরও এক গোল করে মরক্কোর কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল ফ্রান্স। শেষ পর্যন্ত মরক্কোর লড়াইকে বৃথা বানিয়ে ২-০ গোলের ব্যবধানে জিতে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো ফরাসিরা।
বুধবার (১৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ম্যাচের শুরুতেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই মরক্কোর জালে বল পাঠিয়ে দেয় ফ্রান্স। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে রাফায়েন ভারানের থ্রু ধরে মরক্কোর বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন আতোয়ান গ্রিজমান।
গ্রিজমানের কাছ থেকে পাস নিয়ে কিলিয়ান এমবাপে প্রথম দফায় শট নিতে না পারলেও দ্বিতীয় দফায় শট নিলে মরক্কোন ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল চলে যায় বাঁ পাশে। দ্রুত এগিয়ে এসে কাঁধ সমান উঁচু বলে অ্যাক্রোবেটিক শটে লক্ষ্যভেদ করেন থিও এরনঁদেজ।
ম্যাচের শুরুতেই গোল খেলেও ভড়কে যায়নি মরক্কো। মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে গোল শোধের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল তারা। কিন্তু আজ্জেদিন উনাহির গোলার মতো শট প্রতিহত করেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিস।
ম্যাচের ১৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। তবে কাউন্টার অ্যাটাকে অলিভিয়ার জিরুডের বুলেট গতির শটের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মরক্কোর গোলপোস্ট।
৩৬তম মিনিটে আবারও সুযোগ হাতছাড়া করে ফরাসিরা। অহেলিয়া চৌমেনির থেকে বল পেয়ে ফাঁকায় দাঁড়িয়েও শট গোলপোস্টে রাখতে পারেননি জিরু।
বিরতির আগে গোল শোধ করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল মরক্কো। তবে এবার ভাগ্য তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ফরাসি ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার না করতে পারলে দারুণ বাইসাইকেল শট নেন মরক্কো ফুটবলার জাওয়দ এল ইয়ামিক। তবে তার শট ফ্রান্সের গোলপোস্টে আঘাত আনলে এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় মরক্কো।
বিরতির পরও আক্রমণে আধিপাত্য বজায় রাখে মরক্কো। কিন্তু একের পর এক আক্রমণ করলেও ফিনিশিং ব্যর্থতায় গোলের দেখা পাচ্ছিল না তারা। ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে গোলপোস্ট থেকে মাত্র ছয় গজ দূরত্বে বল পেলেও শট নিতে পারেননি মরক্কোর আশরাফ হাকিমি।
ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে একক দক্ষতায় দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন মরক্কোর আব্দেররাজ্জাক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফরাসি গোলপোস্টে শটই নিতে পারলেন না তিনি।
নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে স্রোতের বিপরীতে ম্যাচে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় ফ্রান্স। ৮০তম মিনিটে দারুণ দক্ষতায় মরক্কোর চার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঢুকে গিয়েছিলেন এমবাপে। সেখান থেকেই একজনের পায়ে লেগে বল চলে যায় দূরের পোস্টে। সেখানে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা কোলো মুয়ানি আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন।
ম্যাচের বাকি সময়ে আরও একাধিক আক্রমণ করলেও শেষ পর্যন্ত আর গোল নামক সোনার হরিণের দেখা পায়নি মরক্কো। ফলে আফ্রিকান দেশটির রূপকথার গল্প শেষ হলো সেমিফাইনালেই। আর ২০০২ সালের পর প্রথম দেশ হিসেবে টানা দুই বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো দিদিয়ে দেশমের ফ্রান্স।
আপনার মতামত লিখুন :