• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্রাজিলকে উড়িয়ে আর্জেন্টিনার হাসি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৩, ০৯:২৬ এএম
ব্রাজিলকে উড়িয়ে আর্জেন্টিনার হাসি

দুই বছর আগে ব্রাজিলে না খেলেই ফিরে এসেছিল আর্জেন্টিনা। তখন সাও পাওলোতে ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট পর ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ এজেন্সির (আনভিসা) কর্মকর্তারা মাঠে ঢুকে খেলা পণ্ড করেন। আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়ের বিপক্ষে কোয়ারেন্টিন বিধিমালা ভাঙার অভিযোগে ম্যাচটি খেলতে দেননি তারা। ভিন্ন কারণে ফের ব্রাজিলের মাটিতে পণ্ড হতে বসেছিল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সুপার ক্লাসিকোর ম্যাচ। তবে মারাকানার এ ম্যাচটিকে খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছিল গ্যালারির দাঙ্গা।

ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে গ্যালারিতে উত্তাপের সূচনা। আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে ব্রাজিলের সমর্থকেরা দুয়ো দিতে শুরু করলে ঝামেলার শুরু হয়।  আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ওপর আসন ছুড়ে মারতে শুরু করে ব্রাজিলের সমর্থকেরা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। 

লিওনেল মেসিসহ আর্জেন্টিনা দল এবং মার্কিনিওস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। যদিও তাতে কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে সতীর্থদের নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান মেসি। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর। যা শেষ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয় আর্জেন্টিনার ১-০ গোলের জয়ে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জয়ে একমাত্র গোলটি করেন নিকোলাস ওতামেন্দি।

মাঠে নামতেই কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। শুরুটা হয় রদ্রিগো এবং মেসিকে দিয়ে। একটু পর বাকিরাও জড়িয়ে পড়েন তাতে। এমনকি খেলা শুরুর পরও একটুও কমেনি এর রেশ। ম্যাচটা যে গোলের এবং গোল করেই জিততে হবে সেটি যেন ভুলেই গিয়েছিলেন খেলোয়াড়েরা। ফাউল এবং কার্ডের ছড়াছড়ি ছিল শুরু থেকে। তবে ফাউল এবং কার্ড দেখায় যেমন ব্রাজিল এগিয়ে ছিল, তেমনি মাঠে বল পায়েও আধিপত্য ছিল ব্রাজিলেরই। শর্ট পাস এবং নান্দনিক কিছু ড্রিবলিংয়ে মাঝ মাঠ ও অ্যাটাকিং থার্ডে ভীতি ছড়িয়েছেন রদ্রিগো-জেসুসরা। অন্য দিকে ম্যাচ শুরুর আগের ঘটনায় কিনা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার খেলায় ছিল না পরিকল্পনার কোনো ছাপ।

দুই দলই আজ খেলেছে কিছুটা মারমুখি ভঙ্গিতেই। এতে অবশ্য এগিয়ে ছিলেন সেলেসাওরাই। পুরো ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের দ্বারা ১৬ বার ফাউলের স্বীকার হয়েছেন মেসিরা।

খেলার শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলের জালে লক্ষ্যভেদ করার একটি সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। তবে মার্কোস একুনিয়ার নেয়া বাঁ পায়ের শট জালের দেখা পেতে ব্যর্থ হয়। এরপর নয় মিনিটের সময় মেসির দেয়া পাসে বল পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি নিকোলাস ওতামেন্দী।

এদিকে খেলা শুরুর পর থেকেই আজ আলবিসেলেস্তে ফুটবলারদের ওপর কিছুটা চড়াও হয়েই খেলেছে গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। একের পর এক বাজে ট্যাকলে ব্যস্ত রেখেছে আর্জেন্তাইন ফুটবলারদের। ফলে ৫ মিনিটের মাথায়ই হলুদ কার্ড দেখেন জেসুস। এরপর ১৪ এবং ২৮ মিনিটে রাফারি হলুদ কার্ড দেখান রাফিনহা এবং কার্লোস অগাস্টোকে।

ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হবার আগে গোল করার একাধিক সুযোগ এসেছিল ব্রাজিলের সামনে। তবে মার্কিনিয়োস, রগ্রিগোরা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। কোনো দলই লক্ষ্যভেদ করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত গোল শূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতি থেকে ফেরার পর অবশ্য কিছুটা ছন্দ ফিরে পায় সেলেসাওরা। বেশ কয়েকবারই আক্রমণে আলবিসেলেস্তেদের রক্ষণে চিড় ধরিয়ে গোল করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে জেসুসরা। ৫৪ মিনিটে রাফিনফার নেয়া একটি শট ব্যর্থ হয় জালের দেখা পেতে। এর ৪ মিনিট গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লির নেয়া একটি শটও ব্রাজিলকে এগিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়।

এদিকে ব্রাজিলের একের পর এক সুযোগ হারাবার ফাঁকে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লা সেলসোর দেওয়া পাসে বল পেয়ে দারুণ এক হেডে বল জালে পাঠান নিকোলাস ওতামেন্দি। ফলে এক গোলের লিড পেয়ে যায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। পিছিয়ে পড়ার পর ৭৫ মিনিটের সময় দলকে সমতায় ফেরানোর একটি সুযোগ পেয়েছিলেন তরুণ ফুটবলার এন্ড্রিক। কিন্তু তার নেয়া শটও আজ সেলেসাওদের ভাগ্য ফেরাতে ব্যর্থ হয়।

এদিকে ম্যাচের ৭৮ মিনিটের সময় মেসিকে তুলে নেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। তার বদলে মাঠে নামেন এঞ্জেল দি মারিয়া। আর সেলেসাওদের উপর মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে আসে লাল কার্ড। ৮১ মিনিটের সময় ফাউল করে বসেন জোয়েলিনটন। ফলে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ১০ জনে পরিণত হওয়া সেলেসাওরা এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। 

ব্রাজিলের একাদশ
অ্যালিসন বেকার, এমারসন রয়্যাল, মার্কিনিওস, গ্যাব্রিয়েল, কার্লোস অগাস্টো, ব্রুনো গুইমেরেস, আন্দ্রে, রাফিনহা, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি, রদ্রিগো ও গ্যাব্রিয়েল জেসুস।

আর্জেন্টিনার একাদশ
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, মার্কোস আকুনা, নিকোলাস ওতামেন্দি, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, নাহুয়েল মলিনা, এঞ্জো ফার্নান্দেজ, ম্যাক অ্যালিস্টার, ডি পল, জিওভান্নি লো সেলসো, জুলিয়ান আলভারেজ ও লিওনেল মেসি।
 

Link copied!