সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নারীবাদীদের ৬ দফা দাবি ও বিবৃতি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২১, ০৭:১৭ পিএম
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে  নারীবাদীদের ৬ দফা দাবি ও বিবৃতি

গত তিনদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় ধারাবাহিকভাবে পুজার মন্ডপে লুটপাট অগ্নিসংযোগ, প্রতিমা ভাঙন, হিন্দু ধর্মালম্বী নাগরিককে হত্যা, আহত এবং নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংস আচরণের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বাংলাদেশের নারীবাদী নেটওয়ার্ক তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা অবাক হয়ে দেখেছি, প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার জনগণের সামনে প্রকাশিত হয়নি।

এমনকি আমরা বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনকে নীরব ভুমিকা পালন করতে দেখেছি। দীর্ঘদিন ধরে এই দেশে চলে আসা বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং প্রশাসনের উপযুক্ত পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলেই সাম্প্রদায়িক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে, যা গত তিনদিনে ভয়ংকরভাবে আমাদের সামনে ধরা দিল। আমাদের শ্রমঘামের টাকায় এই রাষ্ট্র চলে। অথচ এ ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্র এই দেশের নাগরিকদের ন্যূনতম অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং বিগত অনেকগুলো ইস্যুতেই ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর প্রচ্ছন্ন মদতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার চিত্র আমরা দেখতে পেয়েছি। যে সাম্য, মৈত্রী এবং মানবিকতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল তা কুচক্রী ক্ষমতালোভীদের ধর্মের নামে সহিংসতা চালানোর মধ্য দিয়ে প্রতিমুহুর্তে বিনষ্ট হচ্ছে।

 

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার এই ভয়াবহতার সময়ে আমরা নারীবাদীরা ৬ দফা দাবি জানাচ্ছি

১. সাম্প্রতিক শারদীয় দুর্গোৎসবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে এবং যারা প্রতিমায় উদ্দেশ্যমুলকভাবে কুরআন রেখে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

২.. রাষ্ট্রধর্মের ধারণা উচ্ছেদ করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকবে না।

৩. ধর্মীয় সমাবেশে ভিন্ন মতালম্বী ও নারীবিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারের সংস্কৃতি বিলোপ করতে হবে। 

৪. বিজ্ঞানভিত্তিক একমুখী শিক্ষা পদ্ধতির প্রচলন করতে হবে। মাদ্রাসা, বাংলা মিডিয়াম, ইংরেজি মিডিয়াম ইত্যাদি কোন বহুমুখী শিক্ষা পদ্ধতি থাকবে না।

৫. সকল নাগরিকের জন্য একটি অভিন্ন পারিবারিক আইন (ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড) প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৬. নাগরিকের বাকস্বাধীনতা, মুক্ত চিন্তা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।   

 

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী

১.    নাসরিন খন্দকার

২.    সুপ্রীতি ধর

৩.    শারমীন শামস

৪.    ইশরাত জাহান উর্মি

৫.    দিলশানা পারুল

৬.    প্রমা ইসরাত

৭.    ফারহানা হাফিজ

৮.    মনজুন নাহার

৯.    কাবেরী গায়েন

১০.  নাইমা নার্গিস

১১.  বীথি ঘোষ

১২.  উম্মে রায়হানা

১৩.  তাসলিমা মিজি

১৪.  আফসানা কিশোয়ার লোচন

১৫.  ফেরদৌস আরা রুমী

১৬.  লাকী আক্তার

১৭.  তাসনুভা আনান শিশির

১৮.  তনিমা তাসনিম

১৯.  ফারিসা মাহমুদ

২০.  মাহমুদা শেলী

২১. লিলিথ অন্তরা

২২.  কাজল দাস

২৩.  আরিফ রহমান

২৪.  মাহফুজা মালা

২৫.  ইমতিয়াজ মাহমুদ

২৬.  পুরবী তালুকদার

২৭.  মোশফেক আরা শিমুল

২৮.  সীমা দত্ত

২৯.  মিতা নাহার

৩০.  মারজিয়া প্রভা

৩১.  মোরসালিনা আনিকা

৩২.  তানিয়াহ মাহমুদ তিন্নী

৩৩.  অপরাজিতা সংগীতা

৩৪.  মেহরান সানজানা

৩৫.  মেহেরুন নুর রহমান

৩৬.  শামীম আরা নীপা

৩৭.  শুচিস্মিতা সীমন্তী

৩৮.  সুমু হক

৩৯.  মিতি সানজানা

৪০.  শতাব্দী ভব

৪১.  ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী

৪২.  সৈকত আমীন

জনসংযোগ বিভাগের আরো খবর

Link copied!