• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা বাড়ছে


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩, ০৫:৩৪ পিএম
সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা বাড়ছে

সরকারি কর্মচারীদের জন্য আবাসন সুবিধা ৮ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করার সময় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী যে বাজেট বক্তব্য দিচ্ছেন, তার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৬ হাজার ৫০৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে ও ৫ হাজার ২১১টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া আরও ৮ হাজার ৮৩৫টি ফ্ল্যাট নির্মাণ ও ৬৪ জেলায় সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ডরমিটরি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”

বর্তমানে চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে। সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ছিন্নমূল জনগণের জন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। যার মাধ্যমে প্রায় ৩৬ হাজার ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ উপকৃত হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় চারটি স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে পদ্মা বহুমুখী সেতুর উভয় প্রান্তে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণসহ ঢাকার পূর্বাচলে আধুনিক ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী সম্পন্ন ১৪২ তলা আইকনিক টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”

এর আগে, বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।

বাজেট প্রস্তাবনায় কোন কোন পণ্যের ওপর কী পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বা কোন কোন পণ্যের শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, তা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। এবারের বাজেটের প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’ যেখানে মূল লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখাসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থায় ভারসাম্য রক্ষা।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে, পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সুরক্ষায় বিলাসবহুল পণ্যে আমদানি নিরুৎসাহিত করছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “এ বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ছাড়া) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২০ শতাংশের সমান। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ১০ শতাংশ।”

অনুদানসহ আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৪ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বিপরীতে ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। তাতে নিট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয় ৩ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা।

অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। যার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ও স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে ও অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ কোটি টাকা ধরছেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে কর বাবদ ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ও কর ছাড়া ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।

কর বাবদ যে রাজস্ব আসবে তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডবহির্ভূত কর ২০ হাজার কোটি টাকা।

Link copied!