• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২,

সোনার দামের ‘পূর্বাভাস’ দিল গোল্ডম্যান স্যাক্স


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম
সোনার দামের ‘পূর্বাভাস’ দিল গোল্ডম্যান স্যাক্স
ছবি : সংগৃহীত

স্বাধীনতার বছর দেশে সোনার ভরি ছিল ১৭০ টাকা। ৫৪ বছর পর সোনার দাম শুনলে অধিকাংশ মানুষই অবাক হবেন। তবে সোনা সব কালেই দামি ধাতু। বর্তমানের কথাই ধরা যাক, ভালো মানের সোনার ভরি ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। এই দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে বিশ্বে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে, পূর্বাভাস এমনই।

বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির সঙ্গে সোনার দামের সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা মানে সোনার বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। কারণ, অস্থির সময়ে বিভিন্ন দেশ সোনায় বিনিয়োগ করে। ঐতিহাসিকভাবেও দেখা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সোনার দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৭০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত এপ্রিলে পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৪০০ ডলারের বেশি পর্যন্ত পৌঁছায়।

বর্তমানে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৬০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পেছনের কারণ হচ্ছে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) আগামী সপ্তাহে সুদহার কমাতে পারে। এসব কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার প্রতি ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। স্পট মার্কেটে বুধবার একপর্যায়ে এক আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৬৫৪ ডলারে দাঁড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জেরে বিশ্ববাজারে যেভাবে সোনার দাম বাড়ছে, তাতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৭০০ ডলারে উঠতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাক্স।

এর আগের তাদের পূর্বাভাস ছিল আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার। শুধু তা-ই নয়, তারা বলছে, সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৬৫০ ডলার থেকে ৩ হাজার ৯৫০ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে পারে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদা ও সোনাভিত্তিক ইটিএফ তহবিলে বিনিয়োগ বাড়বে—এই অনুমানের ভিত্তিতে এই পূর্বাভাস দিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাক্স।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এর মধ্যে মন্দা হলে বছরের শেষ নাগাদ সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৮৮০ ডলারে উঠতে পারে। গত শুক্রবার এই নোটে এই পূর্বাভাস দিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাক্স।

অস্ট্রেলিয়ান ঋণদাতা এএনজেড গ্রুপ বুধবার সোনার দামের পূর্বাভাস আগের চেয়ে বাড়িয়েছে। তাদের পূর্বাভাস, বছরের শেষ দিকে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৮০০ ডলার হতে পারে। আগামী জুন নাগাদ সেই দাম ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানান হয়েছে।

সোনার ব্যবহার কেবল গয়নার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনার রিজার্ভ আবার বাড়ছে। মানুষও সোনার বার ও সোনাভিত্তিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ বাড়ছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, গত বছর সারা বিশ্বে সোনা বেচাকেনা হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৪ টন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বাড়ছে। ২০২৪ সালে এ নিয়ে টানা তিন বছর বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সম্মিলিতভাবে এক হাজার টনের বেশি সোনা কিনেছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি সোনা কিনেছে পোল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা কিনেছে ৯০ টন সোনা।

Link copied!