চলছে শীতের মৌসুম। এ সময়ে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি থাকে, দামও থাকে তুলনামূলক কম। তবে এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভরা মৌসুমে প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর বাজারগুলোতে বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে শীতের সবজি। বেশিরভাগ সবজির দামই ৬০ টাকার ওপরে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, ব্রকলি ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা ও গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৪০ থেকে ৮০ টাকা, খিরা ৩০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৬০ থেকে ১০০ টাকা, আকারভেদে ফুলকপি ৪০ থেকে ৭০ টাকা ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, শীতের কুয়াশা আর মাঝে বৃষ্টিতে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই প্রান্তিক পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে বেশি দামে কিনে বেশি দামেও বিক্রি করতে হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে আরিফ নামের এক ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বিগত সময়ের চেয়ে এবারের শীতে সবজির দাম বেশি। কেন বেশি এটা আমরা বলতে পারবে না। তবে শীত ও বৃষ্টিতে অনেক সবজি নষ্ট হয়েছে। এ কারণে হয়তো দাম প্রান্তিক পর্যায়ে বেড়েছে।”
এদিকে পাইকারি পর্যায়ে কমলেও খুচরা পর্যায়ে বেড়ে গেছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়; আর পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। আবার বাজারে প্রচুর নতুন আলু ও পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও কমছে না দাম। ১১০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে নতুন পেঁয়াজ, পুরাতন পেঁয়াজ ১৪০-১৬০ টাকা। নতুন আলু ৭০-৮০ টাকা, পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও রসুন ২২০-২৪০ টাকা ও আদা ২২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাসান আহমেদ নামের এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, “গত সপ্তাহে দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ১২০ টাকা, দেশি নতুন পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে তিন দফায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত তিনদিনে সবধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০ টাকা করে বেড়েছে।”
ক্রেতারা জানান, প্রতি বছর শীতকালে হরেক রকম সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে। তবে এবার ঠিক উল্টো। প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে দাম। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
রহিম, শফিক ও কাউসার। এক মাসের মেসের বাজার করতে তারা তিন বন্ধু কারওয়ান বাজারে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা হলে কাউসার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমরা মেসে থাকি। এক মাসের বাজার করতে বাজারে এসেছি। বাজারে দেখি সবকিছু দাম বেশি। অথচ এখন শীতকাল, দাম নাগালের মধ্যে থাকার কথা।”
কাউসার আরও বলেন, “বাজারে সবজির দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না আমরা। শীতে সবজির সরবরাহ বেশি, দাম কম থাকার কথা। তবে বাজার মনিটরিংয়ের অভাব যে রয়েছে এটা বাজারে এলেই দেখা যায়।”
আপনার মতামত লিখুন :